অরুণিমা,
আমি তোমার সাথে কথা বলতে চাই। ভীষণ কথা বলতে চাই। অত্যন্ত কথা বলতে চাই। কথায় কাটিয়ে দিতে চাই অশান্ত রাত, শান্ত দিন। পার করতে চাই খর বৈশাখ, ভরা বর্ষা, শুভ্র শরৎ, কনকনে মাঘ, উজ্জ্বল বসন্ত।
এতো কথা বলতে চাই এতো কথা শুনতে চাই, এক জীবনের সময়কালে তা সম্ভব হয়ে উঠবে না। এজন্যে আমার একাধিক জীবন প্রয়োজন। আমি তোমার সাথে কথা বলতে চাই। ব্যাকুল হয়ে কথা বলতে চাই।
জেগে থেকে কথা বলতে চাই। কথা বলতে চাই গাঢ় ঘুমে। তোমার সাথে কথা বলছি কিংবা তোমার কথা শুনছি, এই দৃশ্য ব্যতীত অন্য কিছু আমার স্বপ্নে ঠাঁই পাক আমি চাই না। এটা নিশ্চিত, তোমার সামনে আমি কখনো বেশি কথা বলতে চাইবো না।
আমি চাইবো এবং জোরালো ভাবে চাইবো তোমার কণ্ঠ নিঃসৃত ধ্বনিগুচ্ছ অধিক শুনতে। হয়তো অতি একাগ্রতা বশে তোমার কথা আমার শোনা হবে না, কারণ বিমুগ্ধতা আমাকে ভুলিয়ে দেবে, কথা যে শুনতে হয়।
![](https://chithipotro.com/wp-content/uploads/2021/08/অরুণিমার-কাছে-চিঠি-০৯-1024x682.jpg)
আমি তখন শোনা নয় তোমার কথা অস্থির পান করতে থাকবো তীব্র গরমে শীতল জলের মতো। তবে ঘাম ঝরা গরমে যে-তৃষ্ণা পায় তা দুই কিংবা তিন গ্লাস পানের পর মিটে যায়, তোমার কথা শোনার তৃষ্ণা কখনো তেমন নয়।
ওটা আজীবন থাকবে অতৃপ্ত। আমি তোমার সাথে কথা বলতে চাই। কথা বলতে চাই মুখোমুখি, ফোনে, সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে, দাঁড়িয়ে, বসে, দেয়ালে-রেলিং এ ঠেস দিয়ে, বই হাতে, ফুল হাতে, শূন্য হাতে, অথবা একটি শব্দও উচ্চারণ না-করে শুধু চেয়ে থেকে।
এতো প্রখর আকুলতা সত্ত্বেও তোমার সাথে আমার কথা বলা হয়ে ওঠে না। কী করে বলি বলো? হাজার হোক আমি তো অচেনা মানুষ, দূর মানুষ, অবয়বহীন মানুষ। তারচেয়ে ভয়াবহ আমি যে পুরুষ!
ভালো থেকো
ইতি
রুদ্র
লেখা: রুদ্র আজাদ
আরো পড়ুন
No Comments
Leave a comment Cancel