সুপ্রিয় “শরতের শিশির”,
পর সমাচার এই যে, তোমার “অকাল কুষ্মাণ্ড” বন্ধু তোমার জীবন হতে “অগস্ত্য যাত্রার” আগে কিছু কথা বলবে “অনধিকার চর্চা” করে। আমাদের সম্পর্কটা কিন্তু আগে এমন “আদায় কাঁচকলায়” ছিল না।

যেদিন থেকে “অকূল পাথারে” আমি নিমজ্জিত হলাম, “পিঠে ছুরি মেরে” প্রস্থান নিলে তুমি আমার কাছ থেকে। জানি তোমার কাছে “উড়োচিঠি” দিয়ে আমি “অরণ্যে রোদন” করছি। তবুও “উলুবনে মুক্তা ছড়িয়ে” দিয়ে আমি আমার “ব্যাঙের আধুলি” নিয়ে তোমাকে চিঠির “সাক্ষী গোপাল” বানিয়ে চলে যাব অনেক দূরে। 

“দুধের মাছি” উড়ে গেলে আমার কি যায় আসে বলো? কিন্তু যে “ভূতের বেগার” খেটেছি আমি, “ভিজে বেড়াল” বন্ধু তা কি করে শোধ করবে। তোমার অনুরোধে “ঢেঁকি গিলেছি” আমি বহুবার। “মন না মতি” “যক্ষের ধনের” মত আঁকড়ে ধরেছিল তোমার স্মৃতি, তার পিঠে “মিছরির ছুরি” বসাতে যখন তোমার সামান্যও “বুক কাঁপে” নি তখন “লেফাফা দুরস্ত” ছাড়া আর উপায় রইল কি আমার!

তোমাকে পেয়ে “মণিকাঞ্চন যোগ” হয়েছে বলে যে “এলাহি কাণ্ড” আমি করেছি, “কড়ায় গণ্ডায়” সে মাশুল আমি গুনছি আজ। আমার “একাদশে বৃহস্পতি” এই যে আমি “বর্ণচোরার” আসল রূপটা চিনেছি। “কুলকাঠের আগুনে” জ্বলেও আজ স্বপ্নের “কেঁচে গণ্ডুস” করছি জীবনে।

“গোবর গণেশ”কে গাছে তুলে মই কেড়েছিলে, মনে তুষের আগুন জ্বালিয়েছিলে, “কাছা ঢিলা” আমি তবুও আজ তোমাকে ভাবি। এর “আক্কেল সেলামি” আমায় না দিলে চলে! “কূপমণ্ডুক” মেয়েটার জীবনে যে “খন্ড প্রলয়” এসেছে তার “এসপার ওসপার” ও নিজেই করতে পারবে। “কপাল ফিরতে” হয়ত দেরী হতে পারে, কিন্তু তবুও “আকাশ কুসুম” স্বপ্ন হেমন্তে ফলবে দেখে নিও।

“ছাপোষা” মানুষের জীবন নিয়ে “ছিনিমিনি খেলা” বুঝি এতই সহজ? “ঠোঁটকাটা” “আলালের ঘরের দুলাল” তুমি জেনে নিও, তোমায় যে “ঘোড়ারোগে” পেয়েছে তার ঔষধ ধরবে “তামার বিষে”।

সেদিন তোমার “তালকানা” মুখ দেখে আমি হাসবো না, “দা-কুমড়া” সম্পর্কের শোধ আমি “ঝোঁপ বুঝে কোপ মেরে” তুলবো না। “ঠাট বজায় রেখে” আজও যেমন আছি, “চাঁদের হাটেও” তেমন থাকবো।

কৌশলে কার্যোদ্ধার তোমার “বাঁ হাতের কাজ” হতে পারে, “ফপর দালালি” করে তুমি “পুকুরচুরি” করতে পারো, “ফোড়ন দিয়ে” “কাঁচা পয়সা” তোলার আনন্দ বোঝাতে পারো…। কিন্তু আমার তো “চোখের পর্দা” আছে। “বালির বাঁধ” দিয়ে আমি “তাসের ঘর” বানাই না। “দহরম মহরম” বন্ধুত্বে তোমায় আমি চেয়েছিলাম, কিন্তু আমার “আটকপালে”, “রাবণের চিতায়” ফেললে তুমি আমায়।

“হাটে হাঁড়ি ভাঙবে” জেনেও কথার কথাটা বলি, “হাড় হাভাতে” লোকের “টনক নড়ে” তেমন লাভ না হলেও ওদের “কেতাদুরস্ত” বিবেক “ভিজে বেড়াল” নয়। আমি দোয়া করি “মগের মুল্লুকে” তুমি “ভুষন্ডির কাক” হয়ে থাকো, “মাছের মায়ের পুত্রশোকে” আমি কিছু “ডুমুরের ফুল” পেড়ে দিব তোমায়। 

কিন্তু জেনে রেখ, এই “জিলাপির প্যাঁচে” আর কোনো মেয়েকে আমি হোঁচট খেয়ে মুখ থুবড়ে পড়তে দিব না। আমার আশায় “শত গুড়ে” বালি হোক, অন্য কারো “ঘর ভাঙতে” দেব না আমি তোমায়। “ঢাক ঢাক গুড় গুড়” করে তুমি বেশিদিন “অগাধ জলে সাঁতার” কাটতে পারবে না।

আমার সাথে “অহিনকুল সম্বন্ধ” স্থাপন করে যে ভুল করেছ তুমি, “ঘাটের মড়া” হবার আগে টের পাবে তার “কত ধানে কত চাল”। “ধরাকে সরা জ্ঞান করা” তো স্বভাব তোমার, “গোড়ায় গলদ” আমারই ছিল তোমাকে বিশ্বাস করে “পঁচা শামুকে পা ফেলেছি” আমি।

“ছেলের হাতের মোয়া” বলে “ছকড়া নকড়া” করবে তুমি আমার জীবন! এতই “গোবর গণেশ” ভেবেছ বুঝি আমায়? “আঙুল ফুলে কলাগাছ” হয়ে “ইতর বিশেষ” করছ ধনী গরিবের মাঝে। “আঠার মাসে” বছর পার করে ঠিকই একদিন আমাকে “আকাশে তুলবে” তুমি।


“আষাঢ়ে গল্প” বলে আমি “উলুবনে মুক্তা ছড়াচ্ছি” না গো! “আদাজল খেয়ে লাগো” যতই, প্রথমবার “আক্কেল গুড়ুম” হয়েছি, মাথায় “আকাশ ভেঙে পড়েছে”, কিন্তু “এক মাঘেই শীত তাড়াবো” আমি দেখে নিও। “উড়ে এসে জুড়ে বসে” তোমার থালায় “কাঁঠালের আমসত্ত্ব” বানাতে কোন সুখে আমি লাগবো বলো?

শুধু তোমার “এক ক্ষুরে মাথা মোড়ানো” স্বভাবে একটু “তেলে বেগুন ভাজবো”। “গায়ে ফুঁ দিয়ে বেড়াচ্ছো”, বেড়াও। “গোঁফ খেজুরে” হয়ে বসে থাক “আমড়া কাঠের ঢেঁকি”। এইসব “কেউকাটা” কথায় কান দিও না। শুধু “চোখের বালির” চিঠিটা সযত্নে রেখো। যেদিন আমার দিন ফিরবে আমি তোমার কাছে “উড়োচিঠিটা” ফেরত চাইব। 

তুমিই দেখে নিও, সেদিন আমি ভুলেও তোমার “বুকে বিষাদের ছোরা” ঢুকাবো না, তোমার মাথার “গোবরে পদ্ম” যদি ফোঁটে তো বুঝবে, আমায় “শাঁখের করাতে” কাটার প্রতিশোধ “সুদে আসলে” নেবার বদলে সেদিন তোমায় আমি “চাঁদের হাটে” ভ্রমণ করাবো।      

শোনো “গোকুলের ষাঁড়”, তখন যতই “উদোর পিণ্ডি” “ভুদোর ঘাড়ে চাপাও” না কেন “ঘটিরাম” ডেকেও “চোখ টানানো” বন্ধ হবে না। আমাকে “চামচিকের লাঠি” বলে “চুঁনোপুটি” ভাবতেই পারো, কিন্তু “পাঞ্জা ছক্কা” খেলে “চুলোয় যেও না” দেখো। 

শোনো “ঠগ বাছতে গাঁ উজাড়” করা “ঠুঁটো জগন্নাথ”,  “তুলা ধুনা” করে আমায় ছাড়লে কি হিবে, ঐ “ডাকের সুন্দরী” তোমার “পাকা ধানে মই দিয়ে” “ডামাডোল” বাজিয়ে ছাড়বে। “সাত সতের” “সখাত সলীলে” যেদিন পড়বে, হয়ত বোধের উদয় হলেও হতে পারে।
 

ইতি,  
তোমার “চোখের বালি”
 _______________
প্রেরক- “চোখের বালি”  |  প্রাপক- “শরতের শিশির”
_______________

লিখেছেন: মারইয়াম জামীলা

Comments to: বাগধারার চিঠি

    Your email address will not be published. Required fields are marked *

    Attach images - Only PNG, JPG, JPEG and GIF are supported.

    Login

    Welcome to Chithipotro

    You are couple of steps away from being one of our family member
    Join Us