সিরাজ সাহেবের একমাত্র মেয়ে রহিমা। আর কোনো সন্তান নেই তাঁর। বিশ্ববিদ্যালয়ে লেখাপড়া করেন তাঁর মেয়ে। কিন্তু তাঁর দুই ভাই এবং ভাইয়ের ছেলেরা জীবিত। তাঁর ভাই কিংবা ভাইয়ের ছেলেরা তাঁর সম্পত্তির অংশীদার হোক, এটি তিনি চান না। সিরাজ সাহেব তাঁর সব সম্পত্তি মেয়েকে দিয়ে যেতে চান।

এখন তিনি কী করবেন? তাঁর জীবিতাবস্থায় কি তাঁর একমাত্র মেয়েকে সম্পত্তির মালিক করে দিতে পারবেন? এর সমাধান আছে আইনে। আইন অনুযায়ী, সিরাজ সাহেবকে জীবিতাবস্থায় তাঁর সম্পত্তি মেয়েকে দান করে যেতে হবে। মুসলিম আইনে দানকে হেবা বলা হয়।

স্নেহ ভালবাসার প্রতিদান হিসাবে অনেকে তার প্রিয়জনকে জমি দান করতে চান। আবার পরকালে শান্তির আশা এবং জনহিতকর কাজের জন্য জমি দান করতে চান। ইসলামী উত্তরাধিকার আইন অনুযায়ী কোন ব্যক্তির একমাত্র কন্যা থাকলে সে মোট জমির মাত্র অর্ধেক পায়।

বাকি অর্ধেক জমি উত্তরাধিকার আইন অনুযায়ী নিকটাত্মীয়রা পায়। তবে কেউ তার কন্যাকে সমস্ত জমি দান করে যেতে পারেন। কোন জমির মলিক তার সমস্ত জমি যে কাউকে দান করতে পারেন। দাতা গ্রহীতার উপর সন্তুষ্টির কারণে তার জমি দান করতে পারেন। দান করতে হলে দাতার দান করার ইচ্ছা ও গ্রহীতার সম্মতি থাকতে হয়। জমি দান রেজিষ্ট্রি দলিলের মাধ্যমে করতে হয়।

রেজিস্ট্রি দলিল ছাড়া জমি দান বৈধ না। হেবা ইসলামী আইন অনুযায়ী একজন মুসলমান করে থাকেন। অনেকে দানের সাথে হেবাকে মিলিয়ে ফেলেন। দান ধর্মনিরপেক্ষ যে কোন ধর্মের মানুষ করতে পারে। কিন্তু হেবা একজন মুসলমান ইসলামি আইন অনুযায়ী করতে পারেন।

হেবা মৌখিকভাবে রেজিস্ট্রি দলিল ছাড়াই ২০০৫ সালের ১ লা জুলাইয়ের আগ পর্যন্ত করা বৈধ ছিল। কিন্তু এরপর থেকে হেবা মৌখিকভাবে করলেও ঘোষণার দলিল রেজিষ্ট্রি করতে হয়।

হেবার ঘোষণা রেজিস্ট্রি ছাড়া হেবা বৈধ হয় না। বর্তমানে রেজিস্ট্রি দলিল ছাড়া হেবা করলে সেই জমিতে হেবা গ্রহীতার কোন স্বত্ত্ব স্বার্থ বা মালিকানা জন্মায় না।

আরো কিছু দরকারী লেখা পড়ুন

জেনে নেওয়া যাক হেবা কিঃ
একজন মুসলমান ইসলামী আইন অনুযায়ী কোন সম্পত্তি কোন প্রতিদান ব্যতিরেকে দান করে সঙ্গে সঙ্গে গ্রহীতাকে হস্তান্তর করলে তাকে হেবা বলে। হেবা ইসলামী আইন অনুযায়ী এক ধরনের দান।

হেবা গ্রহীতার প্রতি দাতার প্রীতি ও শুভেচ্ছা স্বরূপ। এবং তার নিকট হতে শ্রদ্ধা ও সম্মান লাভের উদ্দেশ্যে হেবা করা হয়।

আপনি যে কাউকে আপনার সমস্ত সম্পত্তি হেবা করতে পারেন। অছিয়তের ক্ষেত্রে তিন ভাগের এক ভাগের বেশি অছিয়ত না করা গেলেও এখানে সমুদয় হেবা করতে কোন আইনী বাঁধা নেই।

আপনি ব্যক্তি ছাড়াও কোন প্রতিষ্ঠান যেমন- স্কুল, কলেজ বা মসজিদ মাদ্রাসাকে জমি হেবা করতে পারেন। হেবা করা সম্পূর্ণ হলে সেই জমি আর ফেরৎ নেয়া যায় না। তবে ইচ্ছার বিরুদ্ধে হেবা করতে বাধ্য করলে তা হেবা বলে গণ্য হবে না। হেবাকারীর স্বাধীন মতামতের ভিত্তিতে হেবা হতে হবে।

জমি ছাড়াও কোন কোন বস্তু বা অর্থ হেবা করা যেতে পারে। হেবা করতে হলে জমির মূল স্বত্ত্ব হেবা করতে হবে। কোন জমির শুধু লভ্যাংশ বা ফসল হেবা করা বুঝায় না। বন্ধক বা রেহেন দেয়া সম্পত্তিও হেবা করা যায়। আবার রেহেনের টাকাও হেবা করা যায়।

তবে হেবা করার জন্য তিন শর্ত পূরণ করতে হয়। প্রথমত হেবাকারীকে হেবার ঘোষণা দিতে হয়। তার পক্ষে আইনত ক্ষমতা প্রদত্ত কেউ ঘোষণা দিলেও চলে। যেমন- পাওয়ার-অব-এ্যাটর্নির মাধ্যমে ক্ষমতা প্রাপ্ত। দ্বিতীয়ত যার উদ্দেশ্যে হেবা করা হচ্ছে তার দ্বারা হেবা গ্রহণ।

তবে গ্রহণ প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষ হতে পারে। তার পক্ষে তার দ্বারা ক্ষমতাপ্রাপ্ত কেউ হলেও কাজ চলে। তৃতীয়ত হেবা গ্রহীতার হেবাকৃত সম্পত্তির দখল গ্রহণ।

এখন দাদা-দাদী, নানা-নানী, ছেলে-মেয়ে, নাতি-নাতনী, আপন ভাই-বোন, স্বামী-স্ত্রীকে হেবা করার জন্য প্রতিটি হেবা দলিলের জন্য ১০০ টাকা রেজিষ্ট্রেশন ফি দিতে হবে। তার বাইরে কাউকে হেবা করার জন্য সম্পূর্ণ রেজিষ্ট্রেশন ফি দিতে হবে।

রেজিষ্ট্রেশন ফি হার প্রতি বছর হেরফের হতে পারে। বাজেট ঘোষণার সময় রেজিষ্ট্রেশন ফি’র কি হেরফের হবে তা অর্থমন্ত্রী বাজেট বক্তৃতায় বলে দেন। আগে মৌখিকভাবে হেবা করা হলে অনেকে সন্তুষ্ট হতে পারতেন না। ভাবতেন যদি কেউ হেবার ব্যাপারে চ্যালেঞ্জ ছুড়ে দেন তবে হেবাকারীর মৃত্যুর পর বা তিনি বিগড়ে গেলে কিভাবে হেবা প্রমাণ করবে।

কিংবা মিউটেশন করতে গেলে বিড়ম্বনার শিকার হতে পারেন। তাই মৌখিক হেবা করার পর এফিডেভিটের মাধ্যমে ঘোষণা দিতেন যে আমি বিগত অমুক তারিখে অমুকের বরাবরে অমুক জমি হেবা করেছি তাহলেও আপনার কোন রেজিষ্ট্রেশন ফি লাগতো না বা দলিল রেজিষ্ট্রি করতে হতো না অথচ একটি লিখিত প্রমাণ পেয়ে যেতেন।

এতে হেবা সম্পর্কে কেউ চ্যালেঞ্জ করলে তাকে সহজেই পরাস্ত করা যেতো। রেজিষ্ট্রি ছাড়ায় জমি হস্তান্তর করার বিধান থাকায় প্রায়ই জমির মালিকের মারা যাওয়ার পর ভূয়া হেবাগ্রহীতা সেজে মামলা মোকদ্দমা দায়ের করতো। আবার প্রকৃত হেবা গ্রহীতাকে অস্বীকার করে মামলা করতো।

আবার অনেক জমি বিক্রয় করলেও ট্যাক্স ফাকি দেয়ার জন্য হেবা করতো। তাই সরকার ২০০৪ সালে ২৫ নম্বর আইনের মাধ্যমে রেজিষ্ট্রেশন আইন ও সম্পত্তি হস্তান্তর আইন সংশোধন করে হেবা দলিল রেজিষ্ট্রি করার বিধান করেছে। এখন জালিয়াতি করে হেবানামা করা কঠিন। বর্তমানে কাউকে রেজিষ্ট্রি দলিলে হেবা করা হলে তা আগের তুলনায় নিরাপদ।

জেনে নেওয়া যাক দান কিঃ
কোন ব্যক্তি স্বেচ্ছায় এবং কোন প্রকার বিনিময় মূল্য বা প্রতিদান গ্রহণ না করে নিজের মালিকানাধীন কোন স্থাবর বা অবস্থাবর সম্পত্তি অপর ব্যক্তিকে হস্তান্তর করলে এবং সেই ব্যক্তি বা তার পক্ষে অন্য কেউ তা গ্রহণ করলে তাকে বলা হয় দান।

যিনি দান করেন তাকে দাতা এবং যিনি গ্রহণ করেন তাকে দানগ্রহীতা বলা হয়। দাতার জীবদ্দশায় এবং সে যখন দান করতে সম্পূর্ণ সক্ষম সেই অবস্থায় দান গ্রহণ করতে হয়। যদি দান গ্রহণের পূর্বে দানগ্রহীতা মারা যায় তবে উক্ত দান বাতিল বলে গণ্য হয়।

দানের উপাদানঃ
দানের মাধ্যমে দানকৃত সম্পত্তির মালিকানা অন্য ব্যক্তির বরাবরে হস্তান্তর করা হয়। দানের ক্ষেত্রে কয়েকটি বিষয়ের উপর নজর দিতে হয়Ñ
* দানের সময় সম্পত্তিতে দাতার সম্পূর্ণ মালিকানা থাকতে হবে;
* সম্পত্তির মালিকানা হস্তান্তর করতে হবে;
* দানগ্রহীতা কর্তৃক দানটি গৃহীত হতে হবে;
* দান স্বেচ্ছায় সম্পাদিত সম্পাদিত হতে হবে;
* দান বিনিময় মূল্য ছাড়া হতে হবে;
* দানকৃত সম্পত্তির অস্তিত্ব থাকতে হবে;
* যার বরাবরে দান করা হবে, তাকে দানটি গ্রহণ করতে হবে;
* কোন নির্দিষ্ট ব্যক্তির বরাবরে সম্পত্তি দান করতে হবে;
* দাতা সম্পত্তি হস্তান্তরের যোগ্য ব্যক্তি হবেন। নাবালক কর্তৃক সম্পত্তি দান করা হলে তা বাতিল বলে গণ্য হবে। অর্থাৎ দাতাকে সুস্থ মস্তিষ্কের সাবালক ব্যক্তি হতে হবে।

কোন সম্পত্তি দান করতে হলে তা অবশ্যই রেজিষ্ট্রিকৃত দলিলের মাধ্যমে করতে হবে এবং ওই দলিলে দাতা বা তার পক্ষে অন্য কোন ব্যক্তি স্বাক্ষর করবেন এবং অন্ততঃ দুইজন সাক্ষী দ্বারা উক্ত দলিল সত্যায়িত করতে হবে। অস্থাবর সম্পত্তির দান রেজিষ্ট্রিকৃত দলিল বা সম্পত্তির দখল হস্তান্তরের মাধ্যমে করা যায়।

দাতার মৃত্যুর পর দানপত্র রেজিস্ট্রি করা যায় কি-না?
কোন কারণে যদি রেজিস্ট্রি করার আগেই দাতার মৃত্যু হয় তারপরও উক্ত দান রেজিস্ট্রি করা যাবে। তবে দাতা বেঁচে থাকতে দানগ্রহীতা কর্তৃক সম্পত্তিটি গ্রহণ করতে হবে। দান-এর শর্তসমূহ পূরণ করা হলে দাতার মৃত্যুর পরও দানপত্র রেজিস্ট্রি করা যায়।

মুসলিম আইনে দানঃ
মুসলিম আইন অনুসারে মৌখিকভাবে দান করা যায়, এক্ষেত্রে রেজিস্ট্রেশন বাধ্যতামূলক নয়। দাতা দান ঘোষণা করলে, গ্রহীতা উহা গ্রহণ করলে এবং গ্রহীতাকে উহার দখল অর্পণ করলে দান সম্পূর্ণ হয়।

দান সম্পর্কে মুসলিম আইনে যে সমস্ত বিধান আছে তা সম্পত্তি হস্তান্তর আইন দ্বারা ক্ষতিগ্রস্থ হবে না। মুসলিম আইনে বলা আছে, একজন মুসলমান তার সম্পত্তি স্থাবর বা অস্থাবর যাই হোক না কেন এবং সম্পত্তির মূল্য ১০০ টাকার কম বা বেশী যাই থাকুক তা শুধুমাত্র দখল অর্পণের মাধ্যমে অপর ব্যক্তির বরাবরে দান করতে পারবেন।

তবে মুসলিম ব্যতীত অন্য ধর্মাবলম্বী যেমন- হিন্দু, খ্রীষ্টান সম্প্রদায়ভূক্ত ব্যক্তিগণের মাধ্যমে দান সম্পাদিত হলে তা অবশ্যই সম্পত্তি হস্তান্তর আইন অনুযায়ী হবে।


একই সম্পত্তি দুই বা ততোধিক ব্যক্তির বরাবরে দান করা হলে যদি একজন দান গ্রহণে অসম্মতি জানান এবং অন্যজন দান গ্রহণ করেন তবে যিনি দান গ্রহণ করছেন না সম্পত্তিতে তার অংশের দান বাতিল বলে গণ্য হবে।

কিন্তু অন্য দানগ্রহীতা যিনি দান গ্রহণ করেছেন তার বরাবরে কৃত দানটি আইনত: বৈধ এবং কোন দান সম্পাদন করা হলে তা বৈধ হবে। তবে দায়যুক্ত দানের ক্ষেত্রে দানগ্রহীতাকে সম্পত্তির সাথে সম্পর্কিত দায়িত্ব বহন করতে হয় বলে নাবালকের বরাবরে দায়যুক্ত দান সম্পাদন করা যাবে না।

মৃত্যুর সম্ভাবনা কালে দানঃ
যদি একজন লোক এমনভাবে অসুস্থ হয়ে পড়ে যে উক্ত অসুস্থতার দরুণ অবিলম্বে সে মারা যাওয়ার আশংকা থাকে তবে মৃত্যু শয্যায় থাকা অবস্থায় সে যে দান করে তাকে মৃত্যুর সম্ভাবনাময় দান বলে।

যখন কোন ব্যক্তি রোগে আক্রান্ত হয়, রোগ জটিল আকার ধারণ করে এবং রোগ নিরাময়ের জন্য কোন চিকিৎসাই কার্যকর হয় না কিংবা রোগীর অবস্থা খারাপের দিকে যেতে থাকে এবং রোগী জীবনের আশা ত্যাগ করে সেক্ষেত্রে তা অবিলম্বে মৃত্যুর সম্ভাবনা বলে গণ্য হবে।

সাধারণ দান এবং মৃত্যুর সম্ভাবনা কালে দানের মধ্যে পার্থক্য এই যে, সাধারণ দান সাথে সাথে কার্যকরী হয়। অপরদিকে মৃত্যুর সম্ভাবনাকালে দান দাতার মৃত্যুর পর কার্যকরী হয় এবং মৃত্যু না হলে বাতিল হয়ে যায়।

দান আর উইল এক বিষয় নয়
অনেকে মুসলিম আইনে দানকে উইলের সঙ্গে মিলিয়ে ফেলেন। মনে রাখতে হবে, উইল জীবিতাবস্থায় কার্যকর করা যায় না। একমাত্র উইল ঘোষণাকারীর মৃত্যুর পর উইল কার্যকর হয়, কিন্তু দানের ক্ষেত্রে দাতার জীবিতাবস্থায় দান কার্যকর হয়।

তবে দানের ক্ষেত্রে জীবিতাবস্থায় সম্পত্তি হস্তান্তর করে দিতে হবে। আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয় জেনে রাখতে হবে, মুসলিম আইনে উইলের ক্ষেত্রে উত্তরাধিকারীদের অনুমতি ছাড়া সম্পত্তির এক-তৃতীয়াংশের বেশি কার্যকর হবে না, কিন্তু হেবা বা দান পুরো সম্পত্তিই করা যাবে।

তবে দায়ভাগ মতে একজন হিন্দু যাদের ভরণপোষণে আইনত বাধ্য তাদের জন্য উপযুক্ত ব্যবস্থা রাখার পর বাকী সম্পত্তি দান করতে পারেন। মৃত্যুশয্যাকালীন দান উইলের ন্যায় কার্যকরী হবে অর্থাৎ ওই দান অনাত্মীয়ের অনুকূলে করা যাবে কিন্তু মোট সম্পত্তির ১/৩ ভাগের বেশী দান করা যাবে না।

তবে উত্তরাধিকারীগণের সম্মতি থাকলে অনাত্মীয়কে ১/৩ ভাগের অধিক সম্পত্তি দান করা যাবে। এ অবস্থায় কোন উত্তরাধিকারীকে দান করা যাবে না। অজাত ব্যক্তি বরাবরে দান করলে দানের তারিখ হতে ৬ মাসের মধ্যে সে জন্ম গ্রহণ কররে সে দান বৈধ হবে।

দানকৃত সম্পত্তির রেজিস্ট্রেশন এর নিয়ম:
সম্পত্তি দানকৃত হলেও রেজিস্ট্রেশন বাধ্যতামূলক। রেজিস্ট্রেশন (সংশোধন) আইন ২০০৪ এ নতুন সংযোজিত ৭৮ এ ধারা অনুসারে স্থাবর সম্পত্তির দানপত্র দলিল অবশ্যই রেজিস্ট্রি করতে হয়। দান দলিল রেজিস্ট্রেশন ফি নিম্নরূপ:

স্বামী-স্ত্রী, পিতা-মাতা-সন্তান, দাদা-দাদী ও নাতি-নাতনী, সহোদর ভাই-ভাই, সহোদর বো-বোন এবং সহোদর ভাই ও সহোদর বোনের মধ্যে যে কোনো স্থাবর সম্পত্তির দানপত্র দলিল রেজিস্ট্রি ফি মাত্র ১০০ টাকা।

উল্লিখিত সম্পর্কের বাইরের ব্যক্তিবর্গের মধ্যে সম্পাদিত দানপত্র দলিল রেজিস্ট্রির ফি হবে কবলা দলিল রেজিস্ট্রির জন্য প্রযোজ্য ফি’র অনুরূপ।

জীবন স্বত্ত্বে দান দলিল রেজিস্ট্রেশন ফি:
ষ্ট্যাম্প এ্যাক্ট ১৯০৮ এর ৫৮ নং আর্টিক্যাল অনুসারে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, হাসপাতাল, মসজিদ, মাদ্রাসা, কবরস্থান (মুসলিম ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান) এর জন্য জীবন স্বত্ত্বে দানের বিধান হলো যে প্রতিষ্ঠানের নামে সম্পত্তি দান করা হবে সে প্রতিষ্ঠান ওই সম্পত্তি শুধু ভোগ-দখল করতে পারবে, সম্পত্তি কোনরূপ হস্তান্তর করতে পারবে না।

এরূপ জমির ভূমি উন্নয়ন কর পরিশোধ করতে হবে দানকারীর নামে। কোন কারণে ঐ প্রতিষ্ঠানটি কার্যকর না থাকলে সম্পত্তি দানকারীর মালিকানায় চলে যাবে এবং দান দলিল স্বয়ংক্রিয়ভাবে বাতিল হয়ে যাবে। স্ট্যাম্প ফি ২%, রেজিস্ট্রেশন ফি ২.৫%, ই ফিস প্রযোজ্য।

হেবা-বিল এওয়াজ:
মুসলিম আইন অনুসারে কোন কিছু বিনিময় নিয়ে দান করাকে বলে এওয়াজ বা হেবাবিল-এওয়াজ। সম্পত্তি হস্তান্তর আইন ১৮৮২ এর ১১৮ ধারা অনুসারে দু’জন ব্যক্তি যে ক্ষেত্রে পরস্পর নিজেদের মালিকানাধীন কোন জিনিসের মালিকানা হস্তান্তর করে সেক্ষেত্রে কোন একটি জিনিস টাকা না হলে সে আদান-প্রদানকে বলে এওয়াজ বা বিনিময়।

এতে বিক্রয় চুক্তির উপাদান বিদ্যমান থাকায় এটি মূলত এক ধরনের বিক্রয়। এওয়াজ দলিলে বর্ণিত সম্পত্তির একজন দাতা তার নিজের সম্পত্তি অপরজনকে দেওয়ার পর তার প্রাপ্য সম্পত্তি তিনি না পেলে তিনি তার প্রদত্ত সম্পত্তি ফেরত পাওয়ার অধিকারী হবেন। হেবা বিল এওয়াজ অগ্রক্রয়যোগ্য নয়।

হেবা-বিল-এওয়াজ এর উপাদানসমূহ:
গ্রহীতাকে হেবা গ্রহণের বিনিময়ে দাতাকে অবশ্যই কিছু দিতে হবে।
দানের মাধ্যমে নিজেকে সম্পূর্ণরুপে নিঃস্বত্বে পরিণত করতে হবে।
হেবা-বিল এওয়াজের ক্ষেত্রে দখল দান আবশ্যক নয়।
হেবা-বিল-এওয়াজ প্রত্যাহারযোগ্য নয়।

Comments to: সম্পত্তি দান করতে চাইলে যা করবেন

    Your email address will not be published. Required fields are marked *

    Attach images - Only PNG, JPG, JPEG and GIF are supported.

    Login

    Welcome to Chithipotro

    You are couple of steps away from being one of our family member
    Join Us