প্রিয় বন্ধু
ছ্যাচড়া মিজান

জানিনা তুই কেমন আছিস? তবে আমরা ভাল আছি। গতকাল তোর কথা খুব মনে পড়েছিল। কারণ, আমরা তিন বন্ধু মিলে গভীর রাতে হারু সর্দারের বাড়ীর খোয়াড় ভেঙ্গে পাঁচটি মুরগী চুরি করেছিলাম।

রাতেই আমরা রান্না করে খেয়েছি। খাওয়ার সময় তোর কথা খুব মনে পড়ছিল। তিনজন মানুষ পাঁচটা মুরগী খেয়ে শেষ করতে পারছিলাম না। অবশেষে ভাতসহ অনেক মাংস রাতের আঁধারে পুকুরে ফেলে দিয়েছি। ফেলে দেয়ার সময় আফসোস হচ্ছিল।

কারণ তরকারীটা খুব স্বাদ হয়েছিল। তুই থাকলে হয়তো ফেলে দেয়া লাগতো না। তুই তো আমাদের চেয়ে অনেক বেশি খেতে পারিস। মুরগী চুরি করার সময় আরেকটি ঘটনা ঘটেছিল। সেটা শুনলে তুই না হেসে পারবি না।

মুরগী চুরি করে যখন হারু সর্দারের বাড়ির পিছন দিয়ে অন্ধকারে পালিয়ে যাচ্ছি, তখন বাঁশ ঝাড়ের তলে যেতেই ট্যাগরা মিয়া পথ ভুল করে মুরগীসহ পায়খানার গর্তের ভিতর পড়ে গেল। খাড়া গর্ত। গর্ত থেকে আর উঠতে পারছে না।

জোরে চিৎকা‍রও দিতে পারছে না। শুধু মুখ দিয়ে উঁ উঁ করছে। চোরাই লাইট দিয়ে আবছা আলোতে তা‍কিয়ে ‍দেখি পুরো দেহ পায়খানায় তলিয়ে গেছে। শুধু মাথাটা বাকি আছে। তবে মুরগী দুটা উঁচু করে ধরে রেখেছে। কি আর করা, দুইজনে দুহাত ধরে টেনে উঠালাম।

কিন্তু মুশকিল হলো পায়খানার গন্ধে ওর আশে পাশে যাওয়া যাচ্ছিল না। পায়ের পাতা থেকে গলা পর্যন্ত পায়খানা ল্যাপ্টে গিয়েছে। তাড়াতাড়ি ওকে মুরগীসহ বিলের পানিতে চুবিয়ে কচুরী পানা দিয়ে ঘসে ঘসে গন্ধ ছাড়াই।

বিলের ঠান্ডা পানিতে চুবিয়ে দেয়ায় শীতে কাঁপতে কাঁপতে ওর মরার অবস্থা। পরে আগুনে সেঁকে ওকে তাজা করি।

আর শোন, গত সপ্তাহে মতি মিয়ার মর্তমান কলার কাঁধিটা চুরি করেছিলাম। কিন্তু খেতে পারিনি। বিলের উত্তর পার্শ্বের বড় ভিটার জঙ্গলের ভিতর ঘাস বিচুলি দিয়ে ঢেকে রেখেছিলাম। সাথে কানু বেপারীর ক্ষেতের পনর বিশটা বাঙিও রেখেছিলাম।

চুরি করা কলা তো দুদিন আর খোঁজ খবর নিতে পারিনি। দু’দিন পরে সন্ধার সময় লুকিয়ে লুকিয়ে কলা খেতে গিয়ে দেখি, বাঙির গন্ধে হারামজাদা শিয়াল এসে বাঙিসহ সব কলা সাবার করে গেছে। দু’একটি কলা ছিল বটে কিন্তু শিয়াল চেটেছে মনে করে আমরা আর খাইনি।

তুই ঢাকা থেকে কবে বাড়ি আসবি। তোর জন্য মন্ডলের বাড়ির ডাবগুলো রেখে দিয়েছি। তুই আসলেই ওগুলো চুরি করবো। মাধু মন্ডলের খেতের তরমুজ প্রায় শেষের দিকে। তুই না এলে ওগুলো চুরি করতে পারছি না।

আরো অনেক কিছু চুরি করতে হবে। চিঠি পাওয়া মাত্রই তোর কুশলাদি জানিয়ে পত্র দিবি। আর যত তাড়াতাড়ি পারিস বাড়ি চলে আসবি। আমরা সবাই তোর অপেক্ষায় রইলাম।

ইতি তোর বন্ধু
কাউয়া, পাঁচু ও ট্যাগরা মিয়া

Comments to: বন্ধুর জন্য মজার চিঠি

    Your email address will not be published. Required fields are marked *

    Attach images - Only PNG, JPG, JPEG and GIF are supported.

    Login

    Welcome to Chithipotro

    You are couple of steps away from being one of our family member
    Join Us