সাদামাটা একঘেয়ে প্রেম আমাকে কোনদিনই টানেনি। আমার কাছে প্রেম মানে ছবির মত, গল্পের মত, উপন্যাসের মত, রূপকথার মত। আমার প্রেমে রূপকথার রাজকুমার রাজকুমারী হয়তো ছিল না কিন্তু “কালবেলার” মাধবীলতার অনিমেষের জন্য অপেক্ষা ছিল।
কিংবা “শেষের কবিতার” মতো অমিত লাবণ্যের স্বেচ্ছায় দূরে সরে যাওয়া…। এভাবেই লিখেছিলাম একটা উপন্যাস প্রেমের উপন্যাস যার শেষ পাতাগুলি বাকি থেকে গেছে। লিখতে পারিনি… হয়তো বিরহটুকু লিখতে চাইনি তাই ফাঁকা থেকে গেছে শেষের পাতা…।
জীবনে ওই উপন্যাস বুঝি মানুষ একবারই লেখে। কারণ ওই প্রেম জীবনে একবারই আসে।
শরৎচন্দ্র বলেছিলেন- “বড় প্রেম শুধু কাছেই টানে না দূরেও ঠেলিয়া দেয়” কিছু কিছু প্রেমে দূরে সরে যাওয়াটাই বোধহয় ভবিতব্য হয়ে দাঁড়ায়।
একবার তুমি বলেছিলে-তোমাকে ভালবাসতে যখন আমার তোমাকেও প্রয়োজন হবে না, তখন বুঝবো যে আমি সত্যি ভালোবেসেছি। আজ আমার বিন্দু বিন্দু জলকণার মতো ভালোবাসা, যা তোমার বুকে জমা থাকে তার সবটাই তোমাকে ছাড়া আমি অনুভব করতে পারি।
তবে বলো, আমি তাহলে সত্যিই ভালোবেসেছি! তোমাকে ভালোবাসে আমি একটা গোটা উপন্যাস লিখে ফেলেছি, যার শেষ কটা পাতা শুধু ভরাট করিনি স্বইচ্ছায়। কারণ তুমি তোমার ব্যক্তিগত ঝর্ণায় মিশে যাবার পরেও, ভরা বর্ষায় কিংবা গ্রীষ্মের প্রকট দাবদাহে এবং শরতের সাদা মেঘে আমি আমার অস্তিত্ব খুঁজে পাই।
তোমার উপস্থিতিতেই বৃষ্টি হয়ে ঝরে পড়ি আমি এটাই বোধহয় প্রকৃতির নিয়ম। কিংবা তুমি একবার বলেছিলে, তোমায় আমায় উপর থেকে কেউ একজন বেঁধে রেখেছে, তবে কী এ ওই উপরওয়ালার নিয়ম!
তাইতো উপন্যাসের শেষ অধ্যায়টা বিচ্ছেদের না মিলনের পরগাঁথা তা আমি বুঝে উঠতে পারিনা আজও। তাইতো আমি আজও দাবি করি তোমার ভেতরে জমা বিন্দু বিন্দু ভালোবাসাগুলোর অস্তিত্ব আমি ছাড়া আর কেউ কোনদিন টের পায়নি।
আমি ছাড়া তোমায় কেউ কোনদিন পারবে না ভালবাসতে। আমি অতি সহজ পথেই তোমায় ভালোবেসেছি অনেকখানি তাই বুঝি শুধু দু ফোঁটা চোখের জলে এ ভালোবাসার সমাপ্তি ঘটেনি।
আজও এক অদৃশ্য সুতো কি ভীষণ বেঁধে আছে আমাকে, আমাদের। এ ভালবাসার ভার তুমি শেষমেষ নিতে চাওনি। একা বয়ে বেড়াতে হয় আমাকে। কিন্তু সত্যি করে একবার ভেবে বলতো আজও কি তোমার মনের গহীন ঘরে ফোঁটা ফোঁটা আমি জমা হইনা?
আজ ও হাত বাড়ালেই তুমি আমায় খুঁজে পাওনা?
আজও আকাশে যেদিন মেঘ থাকে সেদিন ঝুম বৃষ্টি হয়,, খোলা আকাশ তোমায় আর আমায় মিলিয়ে দেয় এতো অপূর্ণতায় ও এক পূর্ণ ভালবাসার অন্তরালে…
ইতি
বৃষ্টি
লেখা: অনামিকা ভট্টাচার্য্য
No Comments
Leave a comment Cancel