বৃষ্টি তোমাকে

প্রিয় বৃষ্টি,
আমার চোখের জলের বৃষ্টি। আমার অসমাপ্ত কবিতার উপমা। দূর সমুদ্রের গর্জনের মতো হৃদয় আজ কেপে উঠে প্রেমের আভাসে। হৃদয়ে জন্মেছে প্রেম, ফুটেছে তোমার নামের ফুল, প্রেমের ফুল।

জানো হৈচৈ করা আমি টা প্রায় হারিয়েই গেছি, আমি টা আজ রূপান্তরিত স্তব্ধতায়। শুধু তোমাকে ভালবেসে। অনেক দিন হল দেখি না, জানি না কুশল সংবাদ অথবা তুমি কেমন আছো। শুধু মাঝে মাঝে মনে হয় আমি যেমন বেঁচে আছি তুমিও কি তেমন বিচ্ছিরি ভাবে বাঁচো।

আমার চোখের জলে, আমার হৃদয়ের রক্তে তুমি হে আমার নিভৃত নির্মাণ। শুধু স্বীকৃতি টুকু চাই। সারা জীবন দূরে থাকতেও রাজি। ভালবেসে তোমায় পেতে হবে এমন কোন শর্ত প্রেমের ক্ষেত্রে হয়তো বা প্রযোজ্য নয়।

প্রেম কোন শর্তের বেড়া জালে আবব্ধ নয়। আমি দূর থেকেই ভালবাসবো। এক জীবনে অনেক মানুষের সাথে আমাদের দেখা হয়, কথা হয়, আড্ডা হয়, গান হয় আরও হয়তো অনেক কিছুই হয়। কিন্তু কেউ তোমার মতো হৃদয়ে গেঁথে যায়নি।

ধরা দেয়া আর ধরা পড়া কিন্তু এক নয়? তা হয়তো বুঝো। আমি ধরা দিতে চাই, তোমার আপন হাতে আমার হৃদয়ের সমস্ত ভালবাসা দিতে চাই। তুমি আমার সাধের সাধনা।

মনে পড়ে সেই প্রথম দেখার কথা, সকালের মিষ্টি রোদের ঘ্রাণে তুমি এসেছিলে আম্রকাননে। এসেছিলে এলো থেলো চুল বাতাসে উড়ায়ে৷ মনে হয়েছিল যেন বিষাদ শ্রাবণের মেঘপুঞ্জ। মনে পড়ে সেই অবাক দৃষ্টিতে গভীর চাহনি।

তোমার সাথে যতবার দেখা হতো ঠিক তত বারই আমি তোমাকে ফুল আর চুড়ি কিনে দিতাম। তোমাকে নিজ হাতে চুড়ি পড়িয়ে দিতাম। তোমাকে কলেজের গেইটে নামিয়ে দিয়ে আসার পথে তোমার হাত থেকে প্রতিবারই একটা চুড়ি খুলে নিয়ে আসতাম।

তোমার কোমল স্পর্শ মাখা চুড়ি। আর প্রত্যেকটি ফুল থেকে একটা করে পাপড়ি। জানো, তোমার স্পর্শ মাখা চুড়ি আর বর্ণহীন শুকনো ফুলের পাপড়ির স্মৃতি নিয়েই বেচে আছি। আমি নিজের কাছেই প্রতিজ্ঞাবদ্ধ ছিলাম তোমাকে না পেলে আর কাউকে জীবনে দরকার নেই।

সেই আমি এখনো তোমার স্মৃতির পূজা করি আমার হৃদয়ের বেদিতে। অনন্ত প্রেম ও অসীম শ্রদ্ধায়। অনন্তকালের বঁধুর মতো। যার জন্য আমি তোমাকে পাইনি, জানতে পেলাম তুমিও পাওনি তাকে। একই পথের পথিক হলাম বেলা অবশেষে।

মেঘের দুপুরে তুমি একদিন বৃষ্টি হয়ে আসবে আমার হৃদয়ের আঙিনায়, আজ অবধি বেচে আছি সেই প্রতীক্ষায়। তোমার কোন খোঁজ খবর দাও না কেন? নাকি এই টুকুও মানা আছে?

ইতি,
মোঃ রাসেল আহমেদ

০৩/০৯/২০২১
রামপুরা-বনশ্রী, ঢাকা।

লিখেছেন: মো. রাসেল আহমেদ