ভালোবাসা নিও। তোমার চিঠি আমি পেয়েছি। কতো সুখ আর দুঃখের কথা লিখেছ তুমি। তাই আজ হৃদয় খুলে তোমাকে বলতে ইচ্ছে করছে-
কতো দুঃখই তো ভুলে যাই, কতো সুখই তো মনে রাখি না। বলাকার পিছনে পড়ে থাকা পথ কতো আল্পনা নিজে এঁকে যায়- কেউ কি মনে রাখে তারে? একটি পাখি শিস দিয়ে গলা ছেড়ে কারে যেন ডাকে, কোন বঁধু বিরহে ছলাৎ; রাত্রি-জ্যোৎস্না মিলে চুপি-চুপি করে সঙ্গম।
কতো সুখ, কতো দুঃখ, কতো মিলন, কতো বিরহ, কতো দহন সবকিছু থেকেও অজানাই থাকে। কতো কথা বেদনা হয়ে গুমরে গুমরে নিজে মরে যায়, জেগে উঠে বেদনা পাহাড়, এমন কতো শতো কষ্ট পাহাড় চেপে রাখে বুকের ভিতর। যতো কথা বলি- তার চেয়ে কতো কথা না বলাই থাকে। কালের গর্ভে কতো কষ্ট দুই চোখ ফেটে বৃষ্টি নামায়। ব্যথার সুর বেজে ওঠে- দুঃখ ভরা প্রেমিকের করুণ বুকে। দুঃখ গভীর হয়- সুর গভীরতর হয়।
প্রিয়তমা, যে চির সুখী- সে বাঁশি চেনে না, ঘর চেনে- বর চেনে, মন চেনে না। অক্ষরে অক্ষরে কবিতা হয় ঠিক, কিন্তু সুরে সুরে সৃষ্টি হয় পৃথিবীর অব্যক্ত মহাকাব্য। কবিতা নিজে নিজে নৃত্য করে, আর সুর করে অজানার সঙ্গোপনে ভাবের খেলা। চোখ বেদনায় কাঁদে- অশ্রু গড়ায়, আর হৃদয় অনুভবে কেঁদে কেঁদে রক্ত ঝড়ায়।
প্রিয়তমা মেঘবালিকা, তুমি বাঁশি দেখ, সুর দেখ- বাঁশির কান্না দেখ না; তুমি নদী দেখ, ঢেউ দেখ- নদীর তল দেখ না; তুমি চোখ দেখ, অশ্রু দেখ- হৃদয়ের রক্ত দেখ না। জীবনের আরেক নাম- প্রেম, প্রেমের আরেক নাম বিরহ, আর বিরহের আরেক নাম খুন। চোখে নয়- তোমার চোখ দুটি বুজে মন দিয়ে দেখ, আমি দিব্যি আস্ত মানুষ দাঁড়িয়ে আছি- ভিতরে রক্ত গঙ্গা বইছে। মানসী, তুমি চোখ বুজে থাকো- এভাবে এই বুকে আজন্ম রক্ত ঝড়ুক!
ইতি- তোমার চির বঞ্চিত,
অমল
লেখক:ভীষ্মদেব বাড়ৈ
বানারীপাড়া, বরিশাল।
তারিখঃ ২০/০১/২০২৩
No Comments
Leave a comment Cancel