জীবনানন্দ দাশকে লেখা ধূর্জ্জটিপ্রসাদ মুখোপাধ্যায়ের চিঠি

Badshabag, Lucknowo
6. 12. 27

জীবনানন্দবাবু

আপনার প্রেরিত পুস্তকখানা যথাসময়ে এসে পৌঁছেছে। বাড়ী বদল কোরেছি বোলে বড় গোলমালে ছিলাম। ঝরা পালক উড়তে উড়তে আমার গায়ে কি কোরে এল ভেবে পাই না। তবুও আমি সেটিকে শ্রদ্ধা সহকারে গ্রহণ করেছি। যে পাখী ভোরে পূব গগনে উঠে পশ্চিমে রং-এর ভিয়ানে আত্মগোপন করে, এ কি সেই পাখীর পালক?

না, যে পাখী সূর্যাস্তের গরিমায় জন্ম নিয়ে সারারাত কাতর হয়ে ডাকতে ডাকতে ভোর হবার পূর্বেই ক্লান্ত হয়ে বনান্তের গোপন নীড়ে আশ্রয় নেয়, সেই পাখী?

“কপোত বধূ ঘুমিয়ে আছে, নিঝুম ঝিঁঝির বুকের কাছে;

অস্তচাঁদের আলোর তলে, এ কার তবে কান্না?”

এ কি সেই কপোতবধূর ঝরা পালক? না “বনের চাতক মনের চাতক কাঁদছে, অবেলায়?”

বইখানি আসামাত্রই পড়ে ফেলেছি। আমার মতগুলি এখনও তৈরী হয়নি অবশ্য তৈরী হলেই যে তাদের কোনো মূল্য থাকবে বলি না। কিন্তু বর্ত্তমান সাহিত্য পড়তে গেলেই একটা মতামত থাকা চাই।

এক কাল ছিল যখন পড়ার জন্য পড়ে যেতাম, এখন পড়ি মত তৈরী করার জন্য, কিম্বা খণ্ডনের জন্য। দেখছেন তা কি রকম মাষ্টার হয়ে গিয়েছি। যাই হোক, সময় পেলেই আপনার পুস্তিকা সম্বন্ধে কিছু মতামত জানাব। Certificate হিসেবে নয়, শুধু আপনার পত্রোত্তরের আশায়। আপনাকে আমি আন্তরিক ধন্যবাদ জানাচ্ছি।

ইতি বিনীত
ধূর্জ্জটি