সুপ্রিয় আকাশ,
কেমন আছো? ভেজা কুয়াশা মুড়িয়ে ভালো তো নিশ্চয়ই? বলেছিলাম চিঠি লিখবো একদিন তোমায়। কেন জানিনা খুব ইচ্ছে হলো আজ লিখতে; পড়বে কি তুমি?
পৌষ এলে মনে পড়ে তোমায় খুব খুব বেশিই ।পৌষের প্রথম দিন পরিচয় তোমার সঙ্গে আমার। কলেজের মাঠের এককোণে দাঁড়িয়ে শীতের হীমে কাঁপছি আমি। তোমার গায়ে ছিল কালো শাল কি যে সুন্দর লাগছিল জানো না তুমি!
অচেনা আমায় এভাবে কাঁপতে দেখে তুমি এগিয়ে এসে গায়ে শাল জড়িয়ে দিয়ে বললে, “এই মেয়ে তোমার শীত নেই?” অবাক আমি তাকিয়ে ছিলাম তোমার ঐ মায়া ভরা চোখে। কি ছিল জানিনা তবে হারিয়ে ছিলাম তোমাতেই এই আমি।
মনে পড়ে কি আকাশ? ভালোবেসেছিলাম কতোটা দুজন দুজনকে! আমার সমীকরণের সঙ্গে একটা সময় তুমি মেলাতে পারছিলে না কেন? তুমি ছিলে খুব ভালো স্টুডেন্ট আমিও তাই।
নোট আদানপ্রদান করতেই দুজনের কাছে আসা। সিনিয়ার তোমার হেল্পটা আমার প্লাস পয়েন্ট ছিল। স্বপ্ন ছিল নামের মতোই আকাশ ছোঁয়া। দেখেছো কি ছুঁয়ে, ঐ নীলাকাশ তুমি? নাকি আকাশ ছুঁয়েছে তোমার সবুজ মন?
মোহে কি হয় ভালোবাসা? দুজনেই ছিলাম ভালোবাসার পাগল। জুটি ছিল সবার নজর কাড়া। তুমি আমি চলেছি কতটা পথ ঐ কৃষ্ণচূড়ার রঙে পা মাড়িয়ে মনে পড়ে? সেই যে শহীদ মিনারে রাতের প্রথম প্রহরে ফুল দেওয়া নগ্ন পায়ে?
সেদিন পায়ের নুপুর পড়া প্রথম দেখে মুচকি হেসে বলেছিলে “বাব্বাহ্ নুপুরও পড়া হয়?” হ্যাঁ খুব প্রিয় ছিল নুপুর জোড়া। পরদিন কিনে দিয়েছিলে একজোড়া রূপার নুপুর আমায়।
জানো, এখনও আছে, যত্নে রেখেছি। যেমন আছো আমার মনের আকাশে আজও তুমি। এই শোনো তুমি কি ভালোবাসো যাকে ভালোবেসে আমায় করেছো শূন্য? আমি আছি কিন্তু এখনো একা!
না অপেক্ষায় না তোমার। একলা জীবনটা ভালোইতো! উপভোগ করি খুব তোমায় ভেবেই। ভোর থেকে সাঁঝ আর সাঁঝ থেকে ভোর। ভাবনার মাঝে কেউ আসুক চাইনি তাইতো এই একলা একাকী জীবন আমার।
ভালোবেসো তোমার ভালোবাসাকে। আমার জন্য নাইবা রইলো তোমার মনের স্নিগ্ধ আঙিনায় শিউলি হয়ে ফোঁটা।
ভালো থেকো তুমি তোমার সবুজ মন নিয়ে ঐ ভালোবাসার আকাশ জুড়ে ।
ইতি
তোমার
নীলাঞ্জনা
(হ্যাঁ তো! ভাবি যে এখনও আছি তোমার) তাইতো লেখা
লেখা: সাবেরা সুলতানা সুমী
আরো কিছু চিঠি পড়ুন
No Comments
Leave a comment Cancel