সৈয়দ আবুল হোসেন, এমপি
মন্ত্রী
তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি মন্ত্রণালয়
গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকার
তারিখ: ২০ জুন ২০১২

সম্পাদক
দৈনিক প্রথম আলো
ঢাকা।

দৃষ্টি আকর্ষণ : বার্তা সম্পাদক

বিষয় : পদ্মা সেতুর কনসালটেন্ট সুপারভিশন নিয়োগ সম্পর্কে প্রকাশিত সংবাদের প্রতিবাদ প্রসঙ্গে।

শ্রদ্ধেয় সম্পাদক,
আপনার পত্রিকায় ২০ জুন ২০১২ তারিখে প্রথম পৃষ্ঠায় পদ্মা সেতুর পরামর্শক নিয়োগ সংক্রান্ত বিষয়ে প্রকাশিত অসত্য সংবাদের প্রতি আমার দৃষ্টি আকৃষ্ট হয়েছে। এ রিপোর্টে আমার সম্পর্কে বা আমাকে সম্পৃক্ত করে, বিশেষ করে, কমিশন চাওয়া নিয়ে যা লেখা হয়েছে তা ভিত্তিহীন, অসত্য, মনগড়া ও উদ্দেশ্যমূলক।

আমাকে জড়িয়ে কমিশন চাওয়ার যে সংবাদ প্রত্রিকায় প্রকাশিত হয়েছে তা কোনোক্রমেই সত্য নয়। এতে আমি আদৌ সম্পৃক্ত নই। এসএনসি-লাভালিনকে কাজ পাইয়ে দেবার ব্যাপারে অমি কারিগরি মূল্যায়ন কমিটির কাছে কোনো তদবির করিনি বা কাজ দেয়ার জন্য কাউকে বলিনি।

এসএনসি-লাভালিন এবং এর কোনো প্রতিনিধির সাথে অনৈতিক বিষয় নিয়ে আমার কোনো কথা হয়নি। কথা হওয়ার প্রশ্ন অবান্তর। এ বিষয়ে প্রকাশিত সংবাদ পুরোপুরি মিথ্যা। এ ধরনের অনৈতিক, অসত্য খবর প্রকাশ করা কোনোমতেই প্রথম আলোর মতো পত্রিকার কাছে আশা করা যায় না।

আমি যোগাযোগমন্ত্রী ছিলাম। সে কারণে কানাডার প্রাক্তন রাষ্ট্রদূতও দেখা করেছেন। তাদের রেফারেন্সে বিভিন্ন দরদাতা প্রতিষ্ঠানের প্রতিনিধিও আমার সাথে বিভিন্ন সময়ে দেখা করেছেন। আমি এদের সবার সাথে বিভিন্ন সময় যখন দেখা করেছি, তখন সেতু বিভাগের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের উপস্থিতিতে কথা বলেছি।

কখনো একা কারো সাথে দেখা করিনি, কথা বলিনি। এসএনজি-লাভালিনের প্রতিনিধিরাও অন্যান্য দরদাতা প্রতিষ্ঠানের প্রতিনিধিদের মতো আমার সাথে দেখা করেছেন। আমি তাদের বক্তব্য শুনেছি।

তাদের বলেছি-আইন ও নিয়মানুযায়ী তারা যোগ্য বিবেচিত হলে এবং আমার পর্যায়ে উপস্থাপিত হলে আমি বিষয়টি দেখব-যাতে তাদের প্রতি কোনো অবিচার না হয়। মন্ত্রী হিসেবে এর বেশি কোনো কথা আমি তাদের বলিনি।

উল্লেখ্য, এর আগে আপনার পত্রিকাসহ কতিপয় পত্রিকায়ও পদ্মা সেতুর মূল কাজ নিয়ে বিশ্বব্যাংকের কল্পনাপ্রসূত, বায়বীয় ও অসত্য অভিযোগের ভিত্তিতে আমাকে দোষারোপ করা হয়েছিল, অহেতুক আমার নাম সম্পৃক্ত করা হয়েছিল, যা দুদকের তদন্তে প্রমাণিত হয়নি।

দীর্ঘ তদন্ত শেষে দুদক মূল সেতু নির্মাণে কোনো অনিয়ম বা আমার কোনো সংশ্লিষ্টতা পায়নি বলে প্রতিবেদন দিয়েছে। আমি দৃঢ়কণ্ঠে বলতে চাই, পরামর্শক নিয়োগে এসএনসি-লাভালিন-এর বিষয়ে আমাকে সম্পৃক্ত করে যে অমূলক সংবাদ প্রকাশিত হয়েছে তাও তদন্তে অসত্য প্রমাণিত হবে।

আমি সারাজীবন সততা ও নিষ্ঠার সাথে কাজ করেছি, পদ্মা সেতু বাস্তবায়নে কঠোর ও নিরলসভাবে কাজ করেছি। যারা অসত্য অভিযোগ এনে পদ্মা সেতুর কাজ বিলম্বিত করেছে, তাদের অসৎ উদ্দেশ্যও একদিন প্রমাণিত হবে। একদিন তাদের মুখোশও উন্মাচিত হবে।

পরামর্শক নিয়োগে যে অনুমোদন প্রক্রিয়া আমি বিশ্বব্যাংকে অগ্রায়ন করেছি, তা সেতু বিভাগে ডকুমেন্টেড হয়ে আছে। আমার দফতর পরিবর্তনে সে ডকুমেন্ট নিয়ে আসিনি। এখনও তা সেখানে সংরক্ষিত আছে।

প্রয়োজনে বর্তমান মন্ত্রীর কাছ থেকে সেগুলো এনে আপনারা দেখতে পারেন, গবেষণা করতে পারেনÑতাতে আপনারা দেখতে পাবেন আমি কীভাবে স্বচ্ছতার সাথে কাজ করেছি। কোনো একথা স্পষ্টভাবে বলতে চাই, যোগাযোগমন্ত্রীর দায়িত্ব পালনের সময় আমি কোনো অনিয়ম করিনি। কোনো অন্যায় ও মিথ্যার কাছে আত্মসমর্পণ করিনি।

কারো দ্বারা প্রভাবিত হইনি, কোনো দরদাতাকে কোনোপ্রকার সুবিধা দেয়ার জন্য সুপারিশ বা চাপ প্রয়োগ করিনি। আপনার মনে আছে, এর আগেও আপনার পত্রিকায় যোগাযোগমন্ত্রীর অফিস সংস্কার, নতুন গাড়ি ক্রয় এবং আমার গ্রামের বাড়িতে অতিথি-ভবন নির্মাণ সস্পর্কে অসত্য খবর প্রকাশ করা হয়েছিল।

আপনার পত্রিকার এসব অসত্য খবর জনমনে আমার সম্পর্কে ভুলধারণা সৃষ্টিতে কাজ করেছে। আপনার পত্রিকার এসব অসত্য লেখা, উদ্দেশ্যমূলক রিপোর্টে জনমনে আমাকে বিতর্কিত করার অপচেষ্টা হয়েছে। যেমনি, সম্প্রতি অধ্যাপক আবদুল্লাহ আবু সায়ীদকে নিয়ে পত্রিকান্তরে অসত্য খবর প্রকাশ করা হয়েছে।

শ্রদ্ধেয় সম্পাদক, বিষয়টির প্রতি আপনার দৃষ্টি আবারো আকর্ষণ করছি। যোযোগাযোগ মন্ত্রণালয়ের প্রতিটি কাজে আমি স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা নিশ্চিত করেছি। আমার সম্পর্কে অসত্য ও বিভ্রান্তিমূলক খবর যাতে প্রকাশিত না হয়-সেদিকে আপনার হস্তক্ষেপ কামনা করছি।

প্রতিবাদটি আপনার প্রতিবেদনের ন্যায় প্রথম পৃষ্ঠায় সমগুরুত্ব দিয়ে প্রকাশ করার জন্য অনুরোধ করছি।

গভীর শ্রদ্ধান্তে,
একান্তভাবে আপনার,
সৈয়দ আবুল হোসেন, এমপি

আরো পড়ুন

Comments to: প্রথম আলো সম্পাদকের কাছে সৈয়দ আবুল হোসেনের চিঠি-০৪

    Your email address will not be published. Required fields are marked *

    Attach images - Only PNG, JPG, JPEG and GIF are supported.

    Login

    Welcome to Chithipotro

    You are couple of steps away from being one of our family member
    Join Us