সৈয়দ আবুল হোসেন, এমপি
মন্ত্রী
তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি মন্ত্রণালয়
গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকার
তারিখ: ০৯ জুলাই ২০১২

জনাব নুরুল কবীর
সম্পাদক
নিউ এইজ
ঢাকা।

বিষয় : পদ্মা সেতু নির্মাণ তদারকি পরামর্শক (Construcition Supervision Consultant) নিয়োগ সংক্রান্ত কিছু বক্তব্য।

শ্রদ্ধেয় সম্পাদক,
আসসালামু আলাইকুম।
সম্প্রতি পদ্মা সেতুর নির্মাণ তদারকি পরামর্শক (Construcition Supervision Consultant) নিয়োগ সংক্রান্ত বিষয়ে মিডিয়ায় বিভিন্ন খবর প্রকাশিত হয়েছে। ‘বিশ্বব্যাংকের দুর্নীতির আশঙ্কা’ বিষয়ক অভিযোগ মিডিয়ায় ফলাও প্রচার পেয়েছে।

এতে আমাকে জড়িয়েও নানা বিতর্ক, অনৈতিক ও অনিয়মের খবর প্রকাশ করা হয়েছে। বিশ্বব্যাংক ও দুদক-এর উদ্ধৃতি দিয়ে মিডিয়ায় অনেক অসত্য ও অনৈতিক রিপোর্ট করা হয়েছে। এসব রিপোর্ট ও রিপোর্টের ভিত্তিতে গুণিজনের টকশোতে আলোচনা সরকার ও আমার মর্যাদা ক্ষুন্ন করেছে।

এ বিষয়ে গত রাতে টকশোতে আপনার আলোচনাও আমি শুনেছি। আপনার বক্তব্য এবং সুইপিং কমেন্ট আমাকে আহত করেছে, বিস্মিত করেছে। আপনি দেশের একজন সিনিয়র সিটিজেন।

একজন বিশিষ্ট ব্যক্তি। দীর্ঘ অভিজ্ঞতাসম্পন্ন সম্পাদক। দেশের অভিভাবক। আপনার কাছ থেকে সুইপিং কমেন্ট প্রত্যাশিত ছিল না। ফলে, এ বিষয়ে সত্য তথ্য উপস্থাপন এবং তা আপনার গোচরে আনা প্রয়োজন বলে আমার কাছে মনে হয়েছে।

আমার এসব তথ্য হয়তো পদ্মা সেতুর নির্মাণ তদারকি পরামর্শক নিয়োগ সংক্রান্ত বিষয়ের স্বচ্ছতা আপনি জানতে পারবেন, উপলব্ধি করতে পারবেন।

শ্রদ্ধেয় সম্পাদক, আমি ৯ জানুয়ারি ২০০৯ থেকে ৫ ডিসেম্বর ২০১১ পর্যন্ত যোগাযোগমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছি। কিন্তু পদ্মা সেতু নির্মাণ সংক্রান্ত কাজ আমার মন্ত্রণালয়ের তত্ত্বাবধানে, পদ্মা বহুমুখী সেতু নির্মাণ প্রকল্পের অধীনে বাস্তবায়িত হয়েছে।

এ প্রকল্পের অধীন পদ্মা সেতুর ভূমি অধিগ্রহণ, ক্ষতিগ্রস্তদের পূণর্বাসনসহ প্রস্তুতি কাজ, মূল সেতুর প্রাক-যোগ্য দরদাতা নির্বাচন, নির্মাণ তদারকি পরামর্শক নিয়োগ প্রক্রিয়াসহ যাবতীয় কাজ সমাপ্ত হয়েছে।

এক্ষেত্রে সরকারের নিয়ম-কানুন, ক্রয়নীতি, বিধি, বিশ্বব্যাংক ও দাতা সংস্থাদের গাইডলানের এর আলোকে ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে এবং ভূমি অধিগ্রহণ ব্যতীত প্রতিটি ক্ষেত্রেই বিশ্বব্যাংকের সম্মতির পর পরবর্তী কার্যক্রম গৃহীত হয়েছে।

এক্ষেত্রে কোনো ধরনের অনিয়ম, দুর্নীতি ও আপোষের সুযোগ ছিল না বা সেরূপ কিছু ঘটেনি। প্রতিটি স্তরের কার্যক্রম ছিল স্বচ্ছ ও জবাবদিহিমূলক। প্রকল্পের যে-কোনো স্তরের কাজের জবাবদিহি যেমন ছিল যোগাযোগ মন্ত্রণালয়ের কাছে, তেমনি ছিল বিশ্বব্যাংক ও অন্যান্য দাতা সংস্থার কাছে।

প্রথমত প্রকল্পের কারিগরি মূল্যায়ন কমিটি (টিইসি) কাজ মূল্যায়নের পর পরামর্শক কমিটি তা মূল্যায়ন করে বিশ্বব্যাংকের কাছে পাঠায়। বিশ্বব্যাংক মূল্যায়ন করে অনুমোদন দেয়ার পর তার পরবর্তী কার্যক্রম শুরু হয়।

অর্থাৎ কাজের বাস্তবায়ন প্রক্রিয়ায় স্বচ্ছতা এমনভাবে প্রতিষ্ঠিত হয় যাতে কেউ এককভাবে, বিশেষ করে, সেতু বিভাগের বা মন্ত্রণালয়ের কিছু করার অবকাশ না থাকে।

এখানে উল্লেখ্য যে, আন্তর্জাতিক খ্যাতিসম্পন্ন একদল বিশেষজ্ঞের সম্বয়ে একটি কারিগরি কমিটি পদ্মা সেতুর সমুদয় কার্যক্রম পৃথকভাবে মূল্যায়ন করেছে। বিশেষজ্ঞদের আন্তরিকতা, সততা, দক্ষতা, নিরপেক্ষতা ও সুখ্যাতি সম্পর্কে কারো সন্দেহের অবকাশ নেই।

শ্রদ্ধেয় সম্পাদক, আমি পদ্মা সেতুর তদারকি পরামর্শক নিয়োগ সংক্রান্ত মূল্যায়নে ন্যূনতম কোনো হস্তক্ষেপ করিনি। উক্ত মূল্যায়ন কমিটির বিশেষজ্ঞ ব্যক্তিবর্গ অত্যন্ত আদর্শবান, সৎ ও বিশ্বব্যাপী স্বনামধন্য ব্যক্তি হওয়ায় তাঁদেরকে ব্যক্তিগতভাবে আমি শ্রদ্ধার চোখে দেখি।

এদের সবাইকে আপনিও ভালোভাবে চেনেন, জানেন। তাদের স্বচ্ছতা, সততা আপনার অজানা নয়। কোনো দরদাতা প্রতিষ্ঠানকে কাজ পাইয়ে দেয়ার ব্যাপারে আমি টিইসি’র সদস্যদের কাউকে কোনো কথা বলিনি।

কোনো দরদাতা প্রতিষ্ঠানের কাউকে কোনো কথা দিইনি। এমনকি কোনো প্রতিষ্ঠান সম্পর্কে মূল্যায়ন কমিটির কোনো সদস্যের কাছে তদবির করিনি। দরপত্রের যোগ্যতা অনুযায়ী, মেরিট অনুযায়ী, দরদাতা নির্বাচন প্রক্রিয়া অক্ষুন্ন ছিল।

এ প্রসঙ্গে আপনার জ্ঞাতার্থে আমি উল্লেখ করতে চাই, আমি যোগাযোগমন্ত্রী ছিলাম-সে কারণে কানাডার প্রাক্তন রাষ্ট্রদূত দুবার এসএনসি-লাভালিন বিষয়ে আমার সাথে দেখা করেছেন।

রাষ্ট্রদূতরা-যে মন্ত্রীর সাথে তাদের দেশের স্বার্থরক্ষার বিষয় নিয়ে দেখা করেন, তা আপনার অজানা থাকার কথা নয়। প্রাক্তন ব্রিটিশ হাইকমিশনার ও জাপানের রাষ্ট্রদূতও তাদের দেশীয় প্রতিষ্ঠানের ব্যাপারে দেখা করেছেন।

তাদের রেফারেন্সে বিভিন্ন দরদাতা প্রতিষ্ঠানের প্রতিনিধিও আমার সাথে বিভিন্ন সময়ে দেখা করেছেন। আমি এদের সবার সাথে বিভিন্ন সময়ে যখন দেখা করেছি, তখন সেতু বিভাগের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের উপস্থিতিতে আমি কথা বলেছি।

এই দেখা ও কথা বলা ছিল সৌজন্য এবং ভদ্রতা রক্ষার বিষয়। আমি কখনো একা কারো সাথে দেখা করিনি, কথা বলিনি। এসএনসি-লাভালিনের প্রতিনিধিরাও, অন্যান্য দরদাতা প্রতিষ্ঠানের প্রতিনিধিদের মতো, আমার সাথে দেখা করেছেন।

আমি তাদের বক্তব্য শুনেছি। তাদের বলেছি- আইন ও নিয়মানুযায়ী, মেরিট অনুযায়ী, এসএনসি-লাভালিন যোগ্য বিবেচিত হলে এবং আমার পর্যায়ে উপস্থাপিত হলে আমি বিষয়টি দেখব যাতে তাদের প্রতি কোনো অবিচার না হয়।

এ প্রসঙ্গে আপনাকে জানাতে চাই, প্রাসঙ্গিকভাবে আলাপের সময় এসএনসি-লাভালিনের বাংলাদেশে তাদের অতীত নেতিবাচিক কার্যক্রম তথা দুষ্ট রেকর্ডের কথা তাদের আমি স্মরণ করিয়ে দেই। বাংলাদেশে কয়েকটি প্রকল্পের কাজে এসএনসি-লাভালিনের কার্যক্রম সন্তোষজনক ছিল না।

শ্রদ্ধেয় সম্পাদক, এ প্রসঙ্গে আপনাকে আরো জানাতে চাই, দুদক-এর জিজ্ঞাসাবাদ ও মিডিয়ার আলোচনায় জনাব আবুল হাসান চৌধুরীর নাম এসেছে। আমি ব্যক্তিগতভাবে আবুল হাসান চৌধুরীকে চিনি।

আমাদের দলের একসময়ে সক্রিয় নেতা ছিলেন, প্রতিমন্ত্রী ছিলেন। তিনি অত্যন্ত সজ্জন, সুশিক্ষিত, বন্ধুবৎসল ও সভ্রান্ত ব্যক্তি। তা আপনারও অজানা নয়। তাঁকে আপনিও ভালো করে চেনেন।

তিনি আমার কাছে এসেছিলেন-এসএনসি-লাভালিনের বিষয়ে আমাকে অনুরোধ জানিয়েছেন যাতে এসএনসি-লাভালিনের প্রতি কোনো অবিচার করা না হয়। আমি এক্ষেত্রে তাঁকে বলেছি-বিষয়টি আমি দেখব যাতে তাদের ব্যাপারে কোনো অবিচার না হয়।

আবুল হাসান চৌধুরী সম্ভবত ২/৩ বার আমার সাথে দেখা করেছেন। তিনি এসএনসি-লাভালিনের যাদের নিয়ে আমার সাথে দেখা করেছেন তাদের দেখলে আমি কাউকে এখন সম্ভবত আইডেনটিফাই করতে পারব না-কে মো. ইসমাইল, কে রমেশ শাহ বা কে জিয়াউল হক।

তবে, আবুল হাসান চৌধুরীর সাথে সম্ভবত ৪/৫ জন লোক এসেছিলেন। আমি আগেই বলেছি-আমি কারো সাথে দেখা করিনি। কেউ দেখা করতে আসলে সেতু বিভাগের সংশ্লিষ্টদের নিয়ে দরদাতা প্রতিষ্ঠানের প্রতিনিধির সাথে কথা বলেছি।

পত্রিকায় যে নিক্সন চৌধুুরীর নাম এসেছে, সে কখনো পদ্মা সেতুর কোনো বিষয় নিয়ে আমার কাছে আসেনি। তবে, সেতু বিভাগের কোনো কর্মকর্তার কাছে এসেছে কিনা তা আমার জানা নেই।

এসএনসি-লাভালিনসহ দরপ্রস্তাবে অংশগ্রহণকারী সকল প্রতিষ্ঠানের পক্ষ হতেই আমার সাথে সাক্ষাৎ করা হয়েছে। এরূপ সাক্ষাতে এসএনসি-লাভালিন পৃথক কোনো গুরুত্ব পায়নি। আইনের বাইরে, যোগ্যতা যাচাইয়ে মেরিট অনুযায়ী, যে যেখানে এসেছে-সে অনুযায়ী অনুমোদনের জন্য বিশ্বব্যাংকে পাঠানো হয়েছে।

বিশ্বব্যাংক মূল্যায়নে কোনো অসংগতি, আইনের ব্যত্যয় কিংবা অবৈধতার কোনো গন্ধ পেলে তা ক্লারিফিকেশন নিতে সেতু বিভাগে ফেরত পাঠাতে পারত, বা অনুমোদন না নিতে পারতা। এক্ষেত্রে সেতু বিভাগ ও বিশ্বব্যাংকের মধ্যে কোনোপ্রকার সন্দেহ করার সুযোগ নেই। কারণ, বিশ্বব্যাংক ও আমাদের লক্ষ্য স্বচ্ছতা, সততা ও জবাবদিহিতা।

শ্রদ্ধেয় সম্পাদক, এসএনসি-লাভালিনের বিষয়ে আমার পারিবারিক কোনো ব্যবসাপ্রতিষ্ঠানের কোনো সংশ্লিষ্টতা নেই, সংশ্লিষ্টতা ছিল না। আমার পরিবারের কোনো সদস্য বা কোনো আত্মীয় বা কোনো প্রতিনিধি কাউকে ব্লাকমেইল করে অর্থ চায়নি, চাওয়ার প্রশ্নই আসে না।

আপনি জানেন, আমি, আমার দুমেয়ে এবং স্ত্রীকে নিয়েই আমার পরিবার। পৃথিবীতে এমন কোনো ব্যক্তি নেই, যে সাক্ষ্য দেবে আমি কারো কাছে টাকা চেয়েছি এবং হক-হালাল পথ ছাড়া অন্য কোনোভাবে অর্থ উপার্জন করেছি।

সততা, স্বচ্ছতা, জবাবদিহিতা, ইন্টিগ্রিটি, বিনয় এবং ভদ্রতা আমার শক্তি, আমার অহংকার, আমার অঙ্গীকার। আমি দফতর পরিবর্তনের সময় সেসব ডকুমেন্ট নিয়ে আসিনি। এখনও তা সেখানে সংরক্ষিত আছে।

আমি একথা স্পষ্টভাবে বলতে চাই, যোগাযোগমন্ত্রীর দায়িত্ব পালনের সময় আমি কোনো অনিয়ম করিনি। কোনো অন্যায় ও মিথ্যার কাছে আত্মসমর্পণ করিনি। কারো দ্বারা প্রভাবিত হইনি।

কোনো দরদাতাকে, বিশেষ করে, দরদাতা প্রতিষ্ঠান এসএনসি-লাভালিনকে কোনোপ্রকার সুবিধা দেয়ার জন্য কাউকে কোনো সুপারিশ বা চাপ প্রয়োগ করিনি।

শ্রদ্ধেয় সম্পাদক, সাকো ইন্টারন্যাশনাল লি. একটি ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠান। ১৯৭৫ থেকে অত্যন্ত স্বচ্ছতা ও সততা রক্ষার মাধ্যমে কাজ করে সাকো ইন্টারন্যাশনাল লি. দেশে-বিদেশে সুনাম অর্জন করেছে। আমি এ প্রতিষ্ঠানের পূর্বতন ব্যবস্থাপনা পরিচালক।

তবে মন্ত্রিত্ব গ্রহণের আগেই আমি নিজের স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা রক্ষায় সাকো থেকে পদত্যাগ করি। এবং সাকো-কর্তৃপক্ষকে আমার মন্ত্রণালয়ে কাজ/টেন্ডারে অংশগ্রহণ না করা এবং তাদের ব্যবসায়ে আমার নাম ব্যবহার না-করার অনুরোধ জানাই আমার ০৫ জানুয়ারি ২০০৯ তারিখের পদত্যাগপত্রে উল্লেখ আছে।

আমার জানামতে, সাকো ইন্টারন্যাশনাল লি. যোগাযোগ মন্ত্রণালয়ের কোনো টেন্ডারে প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষভাবে অংশগ্রহণ করেনি।

শ্রদ্ধেয় সম্পাদক, পদ্মা সেতু বর্তমান সরকারের রাজনৈতিক অঙ্গীকার। তাই আমি চেয়েছি স্বচ্ছতা ও দ্রুততার সাথে এই সেতুর কার্যক্রমকে বাধাহীনভাবে এগিয়ে নিতে। আমি প্রতিমুহূর্ত, প্রতিক্ষণকে কাজে লাগানোর চেষ্টা করেছি।

কিন্তু কতিপয় স্বার্থান্বেষী ব্যক্তির কারসাজিতে, উদ্দেশ্যমূলকভাবে লেখা তাদের অসত্য ও বেনামি চিঠির কারণে এবং অভিযোগকারীদের এসব কাল্পনিক অভিযোগ প্রমাণ হিসেবে, ডকুমেন্ট হিসেবে গ্রহণ করে বিশ্বব্যাংক ‘সম্ভাব্য দুর্নীতির আশঙ্কা’ প্রকাশ করেছে এবং এই সম্ভাব্য দুর্নীতির আশঙ্কা ভিত্তিতে বিশ্বব্যাংক কর্তৃক গৃহীত ব্যবস্থার কারণে আজকের পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়েছে।

অভিযোগকারীদের এসব কাল্পনিক অভিযোগের ভিত্তিতে মিডিয়াও নেতিবাচক রিপোর্ট করেছে। এর ফলে দেশের ভাবমূর্তি নষ্ট হয়েছে। পদ্মা সেতু বাস্তবায়ন কাজ তিন বছর পিছিয়ে গেছে এবং মন্ত্রী হিসেবে কোনো ধরনের অন্যায়-অনিয়ম না করেও আমার মর্যাদা ও ভাবমূর্তি ক্ষুন্ন হয়েছে।

শ্রদ্ধেয় সম্পাদক, পদ্মা সেতু নির্মাণের তদারকি পরামর্শক নিয়োগ সংক্রান্ত বিষয়ে দুদক-এর কাছে প্রেরিত বিশ্ববাংকের চিঠির বরাত দিয়ে পত্রিকায় পার্সেন্টেজ বিষয়টি বিশ্বব্যাংকের চিঠিতে উল্লেখ আছে কিনা জানি না এটা পত্রিকার/মিডিয়ার মনগড়া লেখা কিনা তাও আমি জানি না।

তবে এতটুকু বলব, যা আমি আগেও বলেছি, কোনো ধরনের অনৈতিক কাজের সাথে আমার কোনো সম্পৃক্ততা নেই। আমি কখনো, কারো কাছ থেকে নিজে বা কারো মাধ্যমে এ-ধরনের অ্যাপ্রোচ করিনি বা কথা বলিনি। বলার প্রশ্নই আসে না।

জীবনের প্রথম থেকে এসব অনৈতিকতা, আমার স্বভাববিরুদ্ধ বিষয়। আমি সততায় বিশ্বাসী। আমি কাজে বিশ্বাসী। কাজ দ্রুত বাস্তবয়ানে আগ্রহী।

পদ্মা সেতুর প্রতিটি কাজ সততা, দক্ষতা ও দ্রুততার সাথে করা হয়েছে। পরামর্শক নিয়োগের ক্ষেত্রে যে কমিটি মূল্যায়ন করেছে, সেই কমিটির সম্মানিত বিশেষজ্ঞদের কেউ বলতে পারবেন না যে আমি কাউকে কোনো বিষয়ে অনুরোধ করেছি, তাদের কোনোভাবে প্রভাবিত করেছি, কোনো কাজ আমার অনুরোধ অনুযায়ী তাদের করতে বলেছি।

আমি মনে করি, মূল্যায়ন কমিটির জ্ঞানী, নির্লোভ, নিরপেক্ষ এবং সৎ সদস্যবর্গ দরপত্র মূল্যায়ন প্রতিবেদন সর্বোচ্চ নিরপেক্ষতার সাথে সম্পাদন করেছেন।

শ্রদ্ধেয় সম্পাদক, কতিপয় মিডিয়ার অসত্য খবর প্রকাশ, বিশেষ করে, ‘প্রথম আলো’ পরিকল্পিতভাবে অসত্য ও মনগড়া রিপোর্ট প্রকাশ করে পদ্মা সেতুর নির্মাণকে বিতর্কিত করেছে, বিশ্বব্যাংককে অভিযোগকারীদের পত্রিকার ক্লিপিংসহ প্রমাণ দিতে সহায়তা করেছে, এবং দেশের ও আমার ভাবমূর্তি নষ্ট করেছে।

এ বিষয়গুলো আলোকপাত করে আমি প্রথম আলোর সম্পাদক জনাব মতিউর রহমানকে একটি চিঠি দিয়েছি। তাঁকে সংশোধনমূলক পদক্ষেপ নিতে অনুরোধ করেছি।

নতুবা আমি আইনি ব্যবস্থা নিতে বাধ্য হব- তাও তাঁকে জানিয়েছি। চিঠিটি আপনার সদয় অবলোকনের জন্য সংযুক্ত করা গেল (সংযুক্তি-১)।

শ্রদ্ধেয় সম্পাদক, আমরা জানি, জ্ঞান হওয়ার পর থেকে শুনেছি সংবাদপত্র ও সাংবাদিক জাতির বিবেক। রাষ্ট্রের চতুর্থ স্তম্ভ। দেশের উন্নয়ন ও অগ্রগতির নিয়ামক। শিক্ষার পথপ্রদর্শক। দেশের সংস্কৃতি বিকাশের বাহক। দেশের ভাবমূর্তি উন্নয়নের হাতিয়ার। সত্য প্রকাশে অঙ্গীকারবদ্ধ।

তাই যখন দেখি, সংবাদপত্র ও সাংবাদিক অসত্য খবর প্রকাশ এবং এ অসত্য খবরকে উপজীব্য করে ক্রমাগত লিখে চলেন, টকশোতে অবলীলাক্রমে অসত্য লেখার উপর ভিত্তি করে কথা বলে চলেন-তখন সত্যি অবাক হই। চিন্তিত হই।

দুঃখ-বেদনা আহত হই। ভাবি, অসত্য কি পৃথিবী নাচিয়ে বেড়াবে? সত্যকে কি কেউ সহায়তা করবে না? শক্তিশালী মিডিয়ার কাছে দেশের সুনাম এবং আমার অর্জিত সুনাম কি নষ্ট হবে? অসত্য বক্তব্য রাজত্ব করবে? ভাবি, এটাই মনে হয়, ইয়লো জার্নালিজম। সেই ফাঁদে আমাকে ফেলা হচ্ছে।

দেশকে, দেশের উন্নয়ন কার্যক্রমকে সম্পৃক্ত করা হচ্ছে। দেশের ক্ষতি করা হচ্ছে। আবার ভাবি, মনে করি, সেই প্রবাদের কথা-Truth shall prevail.

শ্রদ্ধেয় সম্পাদক, এর আগে কতিপয় পত্রিকায় পদ্মা সেতুর মূল কাজ নিয়ে বিশ্বব্যাংকের কল্পনাপ্রসূত, বায়বীয় বা অসত্য অভিযোগের ভিত্তিতে আমাকে দোষারোপ করা হয়েছিল, অহেতুক আমার নাম সম্পৃক্ত করা হয়েছিল, যা দুদকের তদন্তে প্রমাণিত হয়নি।

দীর্ঘ তদন্ত শেষে দুদক মূল সেতু নির্মাণে কোনো অনিয়ম বা আমার কোন সংশ্লিষ্টতা পায়নি বলে প্রতিবেদন দিয়েছে। অবশ্য দুদক-এর এ প্রতিবেদন নিয়েও আপনারা বক্র উক্তি করেন। সাদা সার্টিফিকেট হিসেবে আখ্যায়িত করেন। এটাও দুঃখজনক।

আমি দৃঢ়কণ্ঠে বলতে চাই, পদ্মা সেতু নির্মাণের কোনো পর্যায়ে আমি কোনো অবৈধ কাজ করিনি। পরামর্শক নিয়োগে এসএসসি-লাভালিন-এর বিষয়ে আমাকে সম্পৃক্ত করে যে অমূলক সংবাদ প্রকাশিত হয়েছে, তাও তদন্তে অসত্য প্রমাণিত হবে।

কারণ, অনৈতিক কোনো কাজের সাথে আমি জড়িত নই। আমি সারাজীবন সততা ও নিষ্ঠার সাথে কাজ করেছি। পদ্মা সেতু বাস্তবায়নে কঠোর ও নিরলসভাবে কাজ করেছি। যারা অসত্য অভিযোগ এনে পদ্মা সেতুর কাজ বিলম্বিত করেছে, তাদের অসৎ উদ্দেশ্যও একদিন প্রমাণিত হবে। একদিন তাদের মুখোশও উন্মোচিত হবে।

শ্রদ্ধেয় সম্পাদক, আপনি অবগত আছেন, সম্প্রতি জাতীয় সংসদেও স্পীকার কতিপয় পত্রিকার ভুল রিপোর্ট এবং প্রেক্ষিতে অধ্যাপক আবদুল্লাহ আবু সায়ীদকে নিয়ে সংসদের অনাকাঙ্ক্ষিত বিষয়টি রুলিং দিয়ে নিষ্পত্তি করেছেন।

পত্রিকার ভুল রিপোর্ট সংক্রান্ত কিছু বিষয় আমার বেলায়ও ঘটেছে, ঘটে চলেছে। কতিপয় পত্রিকার অসত্য খবরের উপর ভিত্তি করে অধ্যাপক আবু সায়ীদ সমালোচিত হয়েছেন। এরকম মিথ্যা সমালোচনার শিকার আমি নিজেও।

আপনি জানেন, আমাকে গত বছরের ১৮ আগস্ট সংসদে পত্রিকার একটি ভুল রিপোর্ট নিয়ে দোষারোপ করা হয়েছিল। সংসদে উত্তপ্ত আলোচনা হয়েছে। অথচ এ দোষারোপের বিষয়ে আমার কোনো ভুল ছিল না।

অপ্রতুল বাজেট বরাদ্দের কারণে গত বছর সড়ক উন্নয়ন, মেরামত ও সংস্কারের অনেক কাজ সময়মতো শেষ করা যায়নি। অতি বর্ষার কারণে কিছু সড়কে যাতায়াতে সাময়িক অসুবিধা সৃষ্টি হয়েছিল।

এ নিয়ে সংসদে আলোচনার পর মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর কাছে আমি একটি সারসংক্ষেপ প্রেরণ করি। আমার প্রেরিত সারসংক্ষেপের বিষয়ে কতিপয় পত্রিকা অসত্য খবর পরিবেশন করে। মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর কাছে প্রেরিত সারসংক্ষেপে কারো প্রতি কোনো অসৌজন্যমূলক কথা ছিল না।

সারসংক্ষেপের মূল কপিটি যোগাযোগ মন্ত্রণালয়ে আছে। এর একটি ছায়ালিপি মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে সংরক্ষিত আছে। আমি যখন যোগাযোগমন্ত্রী, সে সময়ে আমার সম্পর্কে কতিপয় পত্রিকা ঢালাওভাবে অসত্য খবর প্রকাশ করে।

এ অসত্য খবরকে ভিত্তি করে টকশোতে আলোচনা হয়। পত্রিকায় প্রবন্ধ লেখা হয়। অথচ মূল খবর সঠিক ছিল না। অসত্য খবরই পরবর্তীকালে আবার খবর সৃষ্টি করে বের করা হয়েছে। মনে হয়েছেÑএটা আমার বিরুদ্ধে একটি সংঘবদ্ধ প্রপাগান্ডা।

এছাড়া, সড়ক দুর্ঘটনায় আমার দায়িত্বের অবহেলার অভিযোগ এনে শহীদ মিনারে কচিকাঁচা শিশুদের গলায় ব্যানার ঝুলিয়ে, অনৈতিক দাবি তোলা হয়েছে। মিডিয়ায় ফরমায়েশি লেখা লেখানো হয়েছে।

কতিপয় পত্রিকার এসব অসত্য সংবাদের ভিত্তিতে, নামে-বেনামে চিঠি লেখা, স্বাক্ষর সুপার ইম্পোজ করে চিঠি লেখা এবং অসত্য ও কল্পনাপ্রসূত অভিযোগ তোলা হয়েছে।

শ্রদ্ধেয় সম্পাদক, আপনি একজন দক্ষ, অভিজ্ঞ ও মননশীল সাংবাদিক, সম্পাদক এবং দেশের সিনিয়র সিটিজেন। চারিদিকে কারা হলুদ সাংবাদিকতায় জড়িত, তা আপনার অজানা নয়।

পত্রিকার একজন সাংবাদিক, বিগত বিএনপি’র আমলে আমার সম্পর্কে অনেক অসত্য খবরভিত্তিক রিপোর্ট করেছে যার ভিত্তিতে সে সময় White Paper তৈরি করা হয়েছে, তদন্তে যা মিথ্যা প্রমাণিত হয়েছে।

এবার যোগাযোগমন্ত্রী হওয়ার পর মন্ত্রীর অফিস সংস্কার, নতুন গাড়ি ক্রয় ও কালকিনিতে আমার বাড়ি নির্মাণ নিয়ে কতিপয় পত্রিকা, বিশেষ করে প্রথম আলো অসত্য খবর প্রকাশ করে, অসত্য খবরের ভিত্তিতে সম্পাদকীয় লেখে, কার্টুন ছাপে।

সেগুলো সব মিলিয়ে, এ অসত্য খবর মিলিয়ে আমাকে বিতর্কিতভাবে চিত্রিত করা হচ্ছে। যোগাযোগমন্ত্রীর ঐ অফিস এখনো বিদ্যমান আছে। আপনাকে যোগাযোগ মন্ত্রণালয়ে গিয়ে তা দেখে আসার অনুরোধ জানাচ্ছি।

শ্রদ্ধেয় সম্পাদক, পদ্মা সেতু আপনার, আমার, জনগণের দাবি। পদ্মা সেতু নির্মাণ বর্তমান সরকারের, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সরকারের রাজনৈতিক অঙ্গীকার। এ অঙ্গীকার বাস্তবায়নে আমি প্রথমদিন থেকে স্বচ্ছতা, জবাবদিহিতা ও সততা নিশ্চিত করে কাজ করেছি।

একথা বলার জন্য নয়, অসত্য খবরের প্রতিবাদের জন্য নয়- এটা সত্য, সত্য, সত্য কথা। আমার সময়ে প্রায় তিন বছরে যোগাযোগ খাতে যে উন্নয়ন কার্যক্রম হাতে নেয়া হয়েছে, যে উন্নয়ন কার্যক্রম শুরু করা হয়েছে, যে উন্নয়ন কার্যক্রম বাস্তবায়ন হয়েছে, তা বিগত সময়ের তুলনায় অনেক বেশি।

বঙ্গবন্ধু সেতু নির্মাণে যে প্রস্তুতিমূলক কাজ করতে ১০ বছর লেগেছে, সেখানে পদ্মা সেতুর জন্য লেগেছে ২ বছর। পদ্মা সেতু নিয়ে যেসব কল্পনাপ্রসূত, বায়বীয়, ভিত্তিহীন, অসত্য অভিযোগ তোলা হয়েছে, তা একদিন অসত্য প্রমানিত হবে। এ অভিযোগ দেশি-বিদেশি ষড়যন্ত্রকারীদের যে কারসাজি, তাও প্রমাণিত হবে।

গত জানুয়ারি ২০০৯ থেকে ডিসেম্বর ২০১১-তিন বছরে যোগাযোগ খাতে যে কাজ হাতে নেয়া হয়েছে, যে কাজ বাস্তবায়িত হয়েছে, যে কাজ শুরু হয়েছে- তা বিগত ১০০ বছরের ভেতরে ৫ বছর মেয়াদি কোনো সরকার গ্রহণ ও বাস্তবায়নে উদ্যোগ নেয়নি।

আমার দায়িত্ব পালন সময়ে এ উন্নয়ন প্রয়াস ভবিষ্যৎ বাংলাদেশের জন্য একটি মাইলফলক ও ঐতিহাসিক দলিল বলে বিবেচিত হবে।

আমি আশা করি, আমার সহকর্মী, আমার বন্ধু, বর্তমান যোগাযোগমন্ত্রী যোগ্যতা ও দক্ষতার সাথে এ কার্যক্রম বাস্তবায়ন করে চলেছেন এবং অবকাঠামোগত চাহিদা পূরণে জাতীয় স্বার্থে মাননীয় সংসদ সদস্যদের অনুরোধে আরো নতুন প্রকল্প গ্রহণ করবেন।

শ্রদ্ধেয় সম্পাদক, আপনি নিশ্চয়ই অবগত আছেন, বিগত দিনে আমার সম্পর্কে যেসব পত্রিকা অসত্য ও উদ্দেশ্যমূলক সংবাদ প্রকাশ করেছে তা দেশের উন্নয়নে বিরাট অন্তরায় হিসেবে যেমন চিহ্নিত হয়েছে, তেমনি আমাকেও ক্ষতিগ্রস্ত করেছে।

অনাহূতভাবে পদ্মা সেতুর কার্যক্রমকে তিন বছর পিছিয়ে দিয়েছে। দেশের সুনাম ক্ষুণœ করেছে। আমার ভাবমূর্তিকে নষ্ট করা হয়েছে। মিডিয়ার এসব অসত্য খবরের ভিত্তিতে সুধীসমাজ পত্রিকায় কলাম লিখেছেন, মধ্যরাতে ইলেকট্রনিক মিডিয়ার টকশোতে আলোচনা করেছেন।

সংবাদপত্রের অসত্য খবরে প্রভাবিত হয়ে আমার সম্পর্কে বিরূপ কথা বলেছেন। আমাকে দর্শকের কাছে, পাঠকের কাছে নেতিবাচকভাবে উপস্থাপন করেছেন। এতে দেশের ভাবমূর্র্তিও ক্ষুণœ হয়েছে, দীর্ঘ মেয়াদে যার পরিণতি দেশের জন্য মঙ্গলজনক নয়।

এটা পদ্মা সেতুর ক্ষেত্রে লক্ষণীয়। কারণ, এসব অসত্য সংবাদের ভিত্তিতেই, অধিকাংশ সময়, বিভিন্ন সংস্থা, বিশেষ করে, আন্তর্জাতিক সংস্থা, বিভিন্ন রিপোর্ট তৈরির মাধ্যমে সরকারের, দেশের কার্যক্রমের মূল্যায়ন করে থাকে।

তাই মিডিয়ার অসত্য খবরের বিষয়ে আপনাদের নতুন করে চিন্তাভাবনা দরকার বলে আমি মনে করি। সম্প্রতি অধ্যাপক আবদুল্লাহ আবু সায়ীদের বক্তব্য মিডিয়া বিকৃত করে প্রচার করায় কী পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়েছে তা আপনার অজানা নয়।

শ্রদ্ধেয় মহোদয়, যোগাযোগমন্ত্রী থাকাকালীন প্রায় তিন বছরের কার্যক্রম নিয়ে যোগাযোগ মন্ত্রণালয় কর্তৃক লেখা ‘সাফল্যের ধারাবাহিকতায়-যোগাযোগ খাত’ নামক পুস্তিকাটি আপনার অবলোকনের জন্য পাঠালাম।

শ্রদ্ধেয় মহোদয়, আমার এ লেখা হয়তো আপনার ভালো লাগবে, হয়তো ভালো লাগবে না। আপনি হয়তো এটাকে আমার সাফাই হিসেবে নেবেন। আমার নিজেকে নির্দোষ প্রমাণের চেষ্টা হিসেবে নেবেন।

মূলত আমি কোনো অন্যায় করিনি। আমি মিডিয়ার কারসাজি ও পরিস্থিতির শিকার। তবুও আমি লিখেছি আপনাকে সত্য ঘটনা জানানোর জন্য, সত্য ঘটনা মনে করে দেয়ার জন্য।

হয়তো এ ব্যাপারে আপনি ইতিবাচক কোনো অনুঘটকের ভূমিকা পালন করতে পারবেন। আশা করি, আপনি সার্বিক বিষয় উপলব্ধি করে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেবেন।

গভীর শ্রদ্ধান্তে,
একান্তভাবে আপনার,
সৈয়দ আবুল হোসেন, এমপি
মন্ত্রী

আরো পড়ুন

Comments to: নিউ এইজ সম্পাদক নুরুল কবীরের কাছে সৈয়দ আবুল হোসেনের চিঠি

    Your email address will not be published. Required fields are marked *

    Attach images - Only PNG, JPG, JPEG and GIF are supported.

    Login

    Welcome to Chithipotro

    You are couple of steps away from being one of our family member
    Join Us