প্রিয় বাবা
কেমন আছো। নিশ্চয় ভালো আছো। ওপারে কি সবাই ভালো থাকে? আমি জানিনা। এপারে আমি ভালো নেই। কাউকে বলতে পারেনি। কোথাও ঘুরতে যদি নদি পেতাম তোমায় লেখা চিঠিগুলো নদির জলে ভাসিয়ে দিতাম। আমার চিঠিগুলো কি তুমি পেয়েছো কিনা আমি জানিনা।
আজ অনেক বছর পর তোমায় আবার লিখছি। আমি অনেক বড় হয়ে গেছি। মা হয়েছি এখন। আর কারো কথায় কষ্ট পাইনা। আর রাগ করে থাকিনা। এখানে রাগ ভাঙার মানুষ নেই বাবা।
বকা খেয়ে কাদিনা। তিরোস্কারে মন খারাপ হয়না। ওপারে থাকলে কি এপারের সবটুকু দেখতে পাও? আমাকে দেখতে পাও না? আমি যে এই নিষ্ঠুর পৃথিবীতে কতোটা কষ্টে আছি তুমি দেখতে পাও না?
শিক্ষিত কিছু মানুষের কি নিষ্ঠুর অত্যাচার আমার উপর তুমি দেখতে পাও না? জানো বাবা এই বারোটা বছর পায়ে শিকল পড়িয়েছে। তোমার বড় ছেলে আজ পর্যন্ত বাহিরের আমি ভিতরের।
আমি কেমন আছি কেউ জানতেও চাইনি। আজ আমি বড় ক্লান্ত ভালো থাকার অভিনয় করতে করতে। কি করে এই নিষ্ঠুর পৃথিবীতে বেছে থাকবো তুমি বলো। তোমার সে ৫ বছরের মেয়েটি অনেক বড় হয়ে গেছে। মা হয়ে গেছে। কিন্ত তুমি জানোনা আজও সে তোমায় খোজে একটু শান্তির আশায়।
শেষ বিকেলের ট্রেনটা যেখানে থামবে সেদিন কি তোমার সাথে আমার দেখা হবে আশায়। আজও আছি। ভালো থেকো। ভালো থেকো।
ইতি
তোমার মেয়ে।
লিখেছেন: শারমীন মুক্তা
No Comments
Leave a comment Cancel