প্রিয়তমা_স্বপ্নবিলাসী,
তুমি নেই বলে..কষ্টের বৃক্ষ পাতা বয়ে ঝরে পড়ে বৃষ্টির ফোঁটা। একটু আগেই ভিজিয়ে দিয়েছিল শরীর। হয়ত ধুয়ে যাবে সকল ক্লান্তি, সেজে উঠবে বাহীর সজীবতায়। ক্লান্তহীন পথের এক মাত্র যাত্রী অন্তর।
সময় হচ্ছে পার বিষাক্ত নিঃশ্বাসে। জানি শ্রাবণ ধারার মত তুমিও বয়ে যাবে নিরন্তর। শুদ্ধ গঙ্গায় স্নান করবে খোলা বাতাস, উড়বে গাংচিল দূরের আকাশে। মেঘের ভাঁজে চুলোচুরি খেলে, হারাবে শত সোনালী রদ্রু। আমিও হারিয়ে যাবো দিশাহীন নাবিকের, ছুটে চলা নৌকার ছেড়া পালে।
না হয় থেকে যাও এই আঁধারের বনবাসে, সে’থায় দেখবে দুঃখ নামের তারার আলো, মিলবে নিরসঙ্গ চাঁদের দেখা। তোমাকে রাঙাতে সেই কবে থেকে, ঝিমধরে বসে আছে রংধনু। না’হয় বাকিটা সময় থেকে যাও, হাতে হাত রেখে, ওগো নিঃসঙ্গস্বপ্নবিলাসী।
তোমার রয়ে যাওয়া আলোর মিছিলের কোন এক কোণা, আজও আঁধারে ঢাকা। বর্ষার অভাবে সেখানে দেখা দিয়েছে ব্যাধি। মরুভূমি হয়ে আছে প্রান্তর, শুষ্ক মাটির বুক। দূরের যাত্রী হয়ে উড়ে যায় শঙ্খচিল।
মাঝে মাঝে ঝিঁঝিঁপোকার ঝাঁঝালো আর্তনাদে, কেঁপে ওঠে বুক। চঞ্চল মনের উদাসীন জানালা বয়ে, বার বার উকি দেয় দুঃস্বপ্ন। একাকী নিরসঙ্গ জীবনের অবসর ঘটিয়ে, একদিন এই স্বপ্ন হয়ত সত্যি হবে ঠিকি। কিন্তু সেদিন আর আমি থাকবনা। মিশে যাবো তোমার অবহেলার, মায়াবী ছায়ায়।
.
কল্পতরুর এই গল্পে, আসক্ত ও আসক্তি মিলেমিশে একাকার। এখন তারা বিষদ নিত্য নাচে আমার প্রতিটা নিঃশ্বাসে। বিশ্বাস মরে লাশ হয়ে আছে, বহু দিন আগে। অনুভূতি গুলো আর আগের মতো কাঁদায় না আনমনে, তবে চোখের কোণে মাঝে মাঝে লোনা জলের অস্তিত্ব আনাগোনা করে।
কারো পরশে আর শিহরণ জাগায় না কোনো সুখ। অসময়ের এই আয়েজন, কাটার মতো বিধে আছে বুকের বামপাশে। এদিকে বসন্ত জেগে ছিল, আমায় ছুঁয়ে যাওয়ার অপেক্ষায়। প্রখর দাবানলে ঝলসে যাওয়া সত্তার অস্তিত্ব আজ, বিলীন হওয়ার পথে।
.
জীবন মৃত্যুর সাময়িক সন্ধিখনে, জন্ম নেওয়া হাজারো প্রশ্নের তীরে, এ হৃদয় বড় আহত। জরাজীর্ণ আত্মার এই অর্তদান, মেনে নেওয়া সহজ ছিলোনা। বেদনার প্রতিকূলে, উড়ে যাওয়া কপতির আলিঙ্গন মধুময় ছিল, কিন্তু তাকে ধরে রাখা বড় অসম্ভব।
ভালোবাসা কি তা জানিনা, তবে করো জন্য খুব মন খারাপ হয়। কাউকে জোর করে ধরে রাখতে ইচ্ছে হয়। কাউকে আপন ভাবতে ইচ্ছে হয়। কেউ সামনে থাকলেও সুখ। মুক্তমনে, এমন এলোমেলো আলোর ঝলক অনেক দেখাযায় কিন্তু চোখ মেললেই বাকিটা ঝাপসা হয়ে আসে।
.
মাঝে মাঝে ভাবনার সাগরে ভাটা পড়ে, জেগে ওঠে মাটির বুকে চিকচিকে বালি। কোথাও থাকেনা কেউ, সুনসান চারিদিক, শুধু দূর থেকে ভেসে আসে সমুদ্রের বুকভাঙ্গা গর্জন। কাউকে ছাড়া কেউ মরে যায়না ঠিকি, শুধু মরে যায় চেনাজানা অনুভূতি, হারিয়ে যায় আবেগী স্মৃতির পাতাগুলো।
আর একটা সময়, চিতার উপর দাহ্য হয় ভালোবাসা নামক রঙিন স্বপ্ন। যন্ত্রনার আগুনে ঝলসে গেছে চাওয়া পাওয়া। স্মৃতির গায়ে, লেগেছে গ্রহণ। ঝরে গেছে, ফাগুনে ফোঁটা ফুল। বুকের ভিতর বেড়ে ওঠা ভালোবাসার বৃক্ষ চারা আজ পাতা শূন্য, এখন দিন রাত হরতাল।
একাকী অনলে, শিউলি ছড়ানো পথের ধারে, দাঁড়িয়ে আছি এখনো তোমার অজুহাতের পাহাড়ে। তুমি ছিলে, সেদিন আমার শত আবদার, তুমি আজ আমার লুকানো যত ভরসা। তোমার অপেক্ষায় অনন্ত সজ্জায় কেটে গেল আমার বাকিটা সময়।।
লিখেছেন: অনুপ দাস, যশোর।
২০/১১/২০২১ (খ্রী) রাত ২ টা
উৎসর্গ: সেই পাগলিটার নামে।
No Comments
Leave a comment Cancel