দিনটা কি ছিলো মনে নেই তবে সেই দিনের অনুভূতিটা বুঝতে সময় লেগেছিল বৈকি, ক্লাস টেনের অবুঝ মনটা সেদিন বড্ড বেখেয়ালি হয়ে মজেছিলো একজনাতে। সেই ব্যাক্তির আড়ালেই তাকে চাওয়ার মধ্যে ছিলো অপ্রত্যাশিত পাওয়া।
ভালোবাসা মানে যে তাকে জানিয়ে ভালোবাসা তা নয় সেটা উপলব্ধি করেছিলাম, লুকিয়ে লুকিয়ে তাকে দেখতে বেশ লাগত যদিও প্রথম দিকে তার দিকে ফিরেও তাকাতাম না কিন্তু কে জানতো ওই মানুষটাই একদিন মনের জমিটা দখল করে বসবে একান্তে, আমার চাওয়া না চাওয়া সত্বেও।
আসলে ভালোবাসা হলো দমকা হাওয়ার মতো কখন কোনটা উরিয়ে নিয়ে যাবে কেউ জানে না। আবার কোনটা উড়িয়ে নিয়ে আসবে সেটাও কেউ জানে না। তবে সেই দমকা হাওয়ার মাঝে থাকে এক ঝাঁক অনুভূতি আর ভালোবাসা যা সবাই অনুভব করতে পারে না।
কিন্তু এতো সহজে তাকে পাবো না কারণ সে বড়ো মুল্যবান তাকে ছোঁয়ার স্পর্ধা তখনও হয়ে ওঠেনি তাই কখনও মনের আকাঙ্ক্ষিত কথাগুলি বলাই হয়নি। তাকে মনের ভাব বোঝানোর ইচ্ছে থাকলেও দূর থেকে তাকে ভালোবেসে যাওয়ার মতো চরম লোভটা আমি কোনমতেই সামলাতে পারিনি।
এভাবেই কেটে গেল কিছু সময় তাকে পাবোনা ভেবে নিজের জীবনে আগানোর চেষ্টায় মত্ত হলাম এরমধ্য বদলে গেলো দুজনের জীবন প্রক্রিয়া। বাড়ি আলাদা হওয়ার সাথে সাথে মানুষ দুটো শারীরিক পর্যায়ে আলাদা হলো।
বন্ধ হলো তাকে এক নজর দেখার উপায় , বন্ধ হলো পায়ে পা মিলিয়ে হাটা , সেদিন মনটা উদাস ছিল তবে আমার মনের সুপ্ত অনুভূতি টের তাকে পেতে দিয়নি। এরপর অবশ্য সে এসেছিল দেখা করতে। সেই দিনগুলো ছিল রোমহর্ষক।
বাড়ির গেটের সামনে দাঁড়িয়ে তার সাথে কথা বলতে যে আমার পৌষ মাসের সেই হাড় কাঁপানো শীত এর মতো কাপুনি আসতো সে বিষয়ে সে অবগতই ছিলো না।
ছিলো না বললে ভুল হবে আমি তাকে অবগত করায়নি বলা যেতে পারে যথার্থভাবে। এরপর মাঝে মাঝে সে কলেজ থেকে বাড়ি যাওয়ার পথে আসতো আমার মণের দোরগোড়ায় করা নাড়তে। কিন্তু সে তো আর জানতো না তার ওই করা নাড়ায় মনটা আরো দুর্বল হয়ে উঠছিল।
এরপর কেটে যায় অনেকগুলো দিন। কিছুদিন পরেই পূর্ণিমায় ঘটা সেই দোলের পূর্ণ তিথিতে মনটা ছিনিয়ে নিয়ে গেলো সে। সে বার যখন রং লাগাতে এলো আমি ঠায় দাড়িয়ে ছিলাম আর তার হাতের ওই ঠান্ডা স্পর্শগুলো অনুভব করছিলাম সেটা যে কতোটা যন্ত্রণাদায়ক তা সে জানতো না।
তার হাতের স্পর্শে কাপছিলাম প্রতিনিয়ত তার হাতেই সেদিনের প্রথম রংটা শরীরে লাগলেও সেটা লগেছিল বুকের মাঝ বরাবর থাকা হৃদয়ে। দাগ টেনে গিয়েছিল তার মাতাল করা স্পর্শে। সে যাওয়ার পরও আমি কাপছিলাম তার ওই মন কারা স্পর্শে। সেইদিন এর অনুভূতি তাকে পাওয়ার আশাটা আরও বাড়িয়ে তুলেছিল।
লিখেছেন: রিয়া বিশ্বাস
No Comments
Leave a comment Cancel