প্রিয়,
কিছু কিছু কথা লেখার শব্দ খুঁজে পাওয়া খুব কঠিন। তোমাকে নিয়ে লিখতে বসে আমারও একই অবস্থা হয়েছে। কোনো শব্দই খুঁজে পাচ্ছিলাম না। কোন শব্দটা দিয়ে তোমাকে সঠিকভাবে ব্যাখ্যা করা যায় সেটা সত্যিই আমার অজানা।
কী দিয়ে শুরু করবো আর কী দিয়ে শেষ করবো কিছুই বুঝে উঠতে পারছিনা। সবটাই এলোমেলো হয়ে যাচ্ছে। আচ্ছা? তুমি কী কেবলই একটা চরিত্র? কেবলই বাংলা অক্ষরের জালে আবদ্ধ কয়েকটা লাইন? নাকি শুধুই গল্পের মূখ্য অংশ? এটুকুই তোমার পরিচয়?
আমার তো মনে হয়না তোমার পরিচয় এতো অল্পতেই সীমাবদ্ধ। তুমি এক ভালোবাসার নাম, এক অনুভূতির নাম, মনের কাল্পনাকে বাস্তবে রূপদান করতে চাওয়া এক অতৃপ্তির নাম, একটিবার সামনে থেকে ছুয়ে দেখতে চাওয়া এক ইচ্ছার নাম, তোমার মতোই একটা তুমি পাওয়ার স্বপ্নের নাম।
হৃদয়ে স্পন্দিত হওয়া প্রতিটা স্পন্দন হয়তো তোমার নামই বলে চলেছে প্রতিনিয়ত। আচ্ছা তুমি কী জাদুকর? নাকি মায়াবী? সবাইকে এভাবে সম্মোহিত কীকরে করো তুমি? সকলের মধ্যে এতো মায়া কীকরে ছড়াও? তুমি কী জানো তোমার কিছু কিছু কথা খুব বেশিই ভয়ংকর?
যা শুনেই আমার সমস্ত শরীর কম্পিত হয়ে ওঠে। তুমি কী জানো তোমার বাঁকা দাতের সেই হাসিটা দেখার জন্যে মন কতোটা তৃষ্ণার্ত? তোমার হাসিতে ছোট হয়ে যাওয়া চোখে হারিয়ে যাওয়ার জন্য মন কতটা ব্যাকুল?
তুমি কী জানো তোমার কপালে পরে থাকা ওই মসৃণ চুলগুলো হাত দিয়ে নেড়ে দেওয়ার কতো প্রবল ইচ্ছা জাগে মনে? হয়তো জানো, জেনে শুনেই বসে বসে মজা দেখছো তাইনা? তা তো দেখবেই, তোমার মায়াবিনীর চিন্তিত, স্তম্ভিত, গোমড়া মুখ দেখতে তো খুব ভালোলাগে তোমার তাইনা?
কিন্তু তবুও তোমাকে নিয়েই ভাবি? কেনো ভাবি? তার উত্তর আজও পাইনি। তুমি জানো তুমি যেদিন আমার গালের পরা টোল, তিল, আর গলার জোড়া তিলদুটোর প্রশংসা করেছিলে সেদিন থেকে আয়নার সামনে যতোবার এই তিল, এই টোল চোখে পরে নিজের অজান্তেই লাজুক হাসি ফোটে আমার মুখে।
যেদিন তুমি আমাকে আদুরে গলায় শ্যামাঙ্গী বলে ডাকলে সেদিন থেকে নিজের এই শ্যামবর্ণের জন্যে নিজেকে অনেক বেশি ভাগ্যবতী মনে হয়। আচ্ছা? এমন কেনো তুমি? নিজেই হাসাও, নিজেই কাঁদাও, নিজেই ভাবাও আবার নিজেই সেই ভাবনায় ছেদ ঘটাও।
কখনও তো আমাকেও একটু সুযোগ দিতে পারো। কোনোদিনও তোমায় বুঝতে পারিনা আমি। তোমার একেকটা শব্দ জেনো একেকটা ধাঁধা। যার সমাধানও কেবলই তোমার কাছে থাকে, আর আমাকে গভীর চিন্তায় মগ্ন করে ফেলে। সেটাও তো তোমারই মায়া, তাইনা?
আমাকে জ্বালাতন করেও তো অদ্ভুত তৃপ্তি পাও তুমি। কিন্তু তোমার তৃপ্তিতই তো আমার পরম প্রাপ্তি। তাই সবটাই হাসিমুখে মেনে নেই। সবশেষ এটুকুই বলব, বদলে যেও না। তোমার গা কাঁপানো ভয়ংকর বাক্য, ধাঁধা, জ্বালাতন সব সহ্য করে নেবো কিন্তু বদলে যাওয়াটা না।
সবসময় এভাবেই সকলের ভালোবাসার নাম হয়েই থেকো এই একটাই চাওয়া তোমার কাছে আমার।
ইতি
শ্যামাঙ্গী
লিখেছেন: আরিফা আঁখি
No Comments
Leave a comment Cancel